গবেষণা প্রতিবেদন

বাংলাদেশে ১১ ধাপে সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাইবার অপরাধ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। নানা বয়স ও পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছে কোনো না কোনো সাইবার অপরাধ। এতে ক্ষতি হচ্ছে জীবন ও সম্পদের। বর্তমানে ভার্চুয়াল জগতে বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের মধ্যে ১১ ধাপে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এর মধ্যে চারটি নতুন ধারার অপরাধ। আর সাইবার অপরাধে আক্রান্তদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেড়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। যদিও ভুক্তভোগীদের ৮০ দশমিক ছয় শতাংশই আক্রান্ত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন না।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস (সিসিএ) ফাউন্ডেশন।
সাইবার সচেতনতা মাস (ক্যাম) অক্টোবর ২০১৯-এর আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটির সহআয়োজক ছিল নবগঠিত থিংক ট্যাংক ফর সিকিউর ডিজিটাল বাংলাদেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন সিসিএ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ।
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাইবার সচেতনতাবিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, নবগঠিত থিংক ট্যাংক ফর সিকিউর বাংলাদেশের আহ্বায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, প্রযুক্তিবিদদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টারের ডিরেক্টর (মার্কেটিং) মাহবুব-উল আলম, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মাহমুদা আফরোজ লাকী ও সাহিত্য সাংবাদিক শাহরোজা নাহরিন।
গবেষণায় দেখা গেছে, সাইবার অপরাধ আক্রান্তদের মধ্যে ফোনে বার্তা পাঠিয়ে হুমকির শিকার হচ্ছেন ছয় দশমিক ৫১ শতাংশ, কপিরাইট লঙ্ঘনের ঘটনা পাঁচ দশমিক ৫৮ শতাংশ, অনলাইন কাজ করিয়ে নিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে এক দশমিক ৪০ শতাংশ। সিসিএ ফাউন্ডেশনের ২০১৮ সালের গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘটিত অপরাধের চেয়ে এবারের জরিপে মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে পর্ণোগ্রাফি। এ অপরাধ দুই দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ।
দেশে ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতারণাও। ভুক্তভোগীদের সাত দশমিক ৪৪ শতাংশ এ অপরাধের শিকার, যা আগের প্রতিবেদনে ছিল আট দশমিক ২৭ শতাংশ। জরিপে বয়সভিত্তিক সাইবার অপরাধে আক্রান্তের ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগ ভুক্তভোগীর বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের কম। পরিসংখ্যানে ভুক্তভোগীদের দ্বিতীয় অবস্থানে শিশু। গতবারের চেয়ে এবার সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এ হার ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মাহমুদা আফরোজ লাকী বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত নিজেরা নিজেদের বিপদে ফেলছি। এজন্য আমাদের নিজেদের মধ্যে তথ্য শেয়ারের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’ এছাড়া সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তিনি আইনের আওতায় শাস্তির বিষয়ে জোর দেন।
মিজানুর রহমান খান মনে করেন, সাইবার অপরাধ কমাতে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতনতার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক তার পরিবারের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। এছাড়া আক্রান্তরা সাইবার অপরাধ ট্রাইবুন্যালে মামলা না করতে পারলে পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০