অক্টোবরে রপ্তানি আয় ৪৭৩ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড মহামারির জড়তা কাটিয়ে একক মাসে রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি আয় দেশে এসেছে। এতে করে অর্থবছরের শুরুর দিকের খারাপ অবস্থা কাটিয়ে চাঙা হয়ে উঠছে রপ্তানি খাত।

অক্টোবরে ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এক মাসে এত বেশি রপ্তানি আয় আর কখনও দেশে আসেনি, যাকে একক মাসে রেকর্ড আয় বলছেন রপ্তানিকারকরা।

রপ্তানির এ খবর শুনে বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এটা বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে সর্বোচ্চ রেকর্ড। পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে সার্বিক রপ্তানির চিত্রটি দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজার চাঙা হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশে পোশাকের অর্ডারও অনেক বেড়েছে। আগামী কয়েক মাস পোশাকের রপ্তানিচিত্র ভালো থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।’

এদিকে ইপিবির তথ্য বলছে, সবশেষ মাস অক্টোবরে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধিও হয়েছে অনেক বেশি, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি।

এর আগের মাস সেপ্টেম্বরেও একক মাসে রেকর্ড পরিমাণ ৪১৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল, প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৮ শতাংশ। গতকাল ইপিবি থেকে প্রকাশিত রপ্তানি তথ্যে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে রপ্তানি আয়ে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয় আগের বছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ পিছিয়ে ছিল। আগস্টে একক মাস হিসেবে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হলেও সার্বিক রপ্তানি নেতিবাচক ধারা থেকে বের হতে পারেনি। সেপ্টেম্বরে এসে রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ এগিয়ে গেল। আর অক্টোবরে প্রবৃদ্ধির সূচক দ্বিগুণ হলো।

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে সম্প্রতি সুতার মূল্য বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ইয়ার্নের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এর সঙ্গে সমন্বয় করতে হলে পোশাকের দামও অন্তত ২০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার কথা। সেই পরিমাণ না বাড়লেও কিছুটা বেড়েছে।

চীন ও ভিয়েতনাম ‘কিছু বিপদের’ মধ্যে আছে বলে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, সেখান থেকে কিছু অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হতে শুরু করেছে। সরকার চাইলে যথাযথ নীতি সহায়তা দিয়ে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রপ্তানি পরিস্থিতির স্থানীয় উন্নতি ঘটাতে পারে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও এক মাসে এ পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়নি। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪১৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

সবমিলে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) এক হাজার ৫৭৫ কোটি (১৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, টাকার হিসাবে যা এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা।

এ চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন রপ্তানিকারকরা। লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান রপ্তানি আয়ের এ উল্লম্ফনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘সত্যিই আমরা খুশি। এত দ্রুত করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে আমরা ঘুরে দাঁড়াব, ভাবতে পারিনি।’ আগামী দিনগুলোয় রপ্তানি আয় আরও বাড়বে বলে আশার কথা শোনান তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০