নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত শ্বাসকষ্ট থেকে জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনের বিল বাড়িয়ে কিছু বেসরকারি হাসপাতাল রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গতকাল ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি মার্চ মাসে বলেছি, করোনার যে রোগী আসছে, আমাদের ভেন্টিলেটরের চেয়ে তাদের বেশি প্রয়োজন অক্সিজেন। অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সাপ্লাই আছে কি না, দেখেন। আমরা দেখেছি, যেভাবে যে কেউ অক্সিজেনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রাইভেট অনেকগুলো সেন্টারে এত বেশি দাম নিচ্ছে অক্সিজেনের, একদম প্রতারণা।’
কভিড-১৯-আক্রান্ত ব্যক্তি ও অক্সিজেন সরবরাহে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংকটের কারণে সিলিন্ডারভর্তি অক্সিজেনের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।
গত ১০ জুন করোনা মহামারিতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেনসহ পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ, মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও এসবের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের উকিল নোটিসও দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের প্রতারণার চিত্র তুলে ধরে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেখেছি, এক হাজার লিটারের অক্সিজেনের জন্য খরচ পড়ে মাত্র ৭০ টাকা। লাখ টাকার বিলও দেখেছি আমরা।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা প্লাজমার জন্য বুধবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে রক্ত দেন। ‘এজন্য সরকারের উচিত হবে… নৈতিক ও মানবিক দায়িত্বে যেটা উচিত হবে… এ সময়ে মূল্য স্থির না করে দিলে জনগণকে প্রতারণা থেকে রক্ষা করা যাবে না।’
সদ্য করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা বিএনপির সংসদ সদস্য ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা এদিন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে এসে প্লাজমা সংগ্রহের জন্য রক্ত দিয়ে যান।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছি, সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছি। সাংবাদিকরা নিউজ করেছেন। এটা কিন্তু লুকিয়ে রাখার অসুখ নয়। আপনার কাছ থেকে আপনার পরিবার আক্রান্ত হবে, পরিবার থেকে বাইরে যারা আছেন প্রতিবেশী, তারাও আক্রান্ত হতে পারেন। লজ্জার কিছু নেই। লুকাবেন না। লুকালেই ঝুঁকিতে পড়বেন আপনার পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা।’
রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আজকে আমি প্লাজমা দিচ্ছি। এ রক্ত দিয়ে পাঁচজন উপকৃত হবে। পাঁচজন মানুষকে আমি রক্ত দিয়ে উপকার করতে পারব, এটা আমার বড় পাওয়া। আশা করি শুধু মন্ত্রী-এমপিরা নন, সাধারণ মানুষ করোনা নেগেটিভ হলে রক্ত দিতে আসবেন।’