Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:13 pm

অজিদের সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে শেষটা রাঙাল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক: মিরপুরের উইকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে অচেনায় থেকে গেল। এ সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে সাকিব আল হাসান, নাসুম আহমেদ ও একাদশে জায়গা পাওয়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সোমবার এ তিন তারকার বোলিং তোপে অজিরা গুটিয়ে যায় নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সবচেয়ে কম রানে। এ সুবাদে সিরিজের শেষ ম্যাচ ৬০ রানে জিতে রাঙাল টিম টাইগার্স।
আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশের। তাই সোমবার একাদশে দুটি পরিবর্তন এনেছিল স্বাগতিকরা। তারপরও টাইগারদের ব্যাটিং ভালো হয়নি। টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে তারা করতে পারে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২২ রান। তারপরও টাইগাররা ভক্তরা জয়ের আশায় করেছিল। শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও নাসুমের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যের সুবাদে অজিদের ১৩.৪ ওভারে মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে দিয়ে দারুণ জয়ই উপহার দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এর ফলে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ টাইগাররা নিজেদের করে নিয়েছে ৪-১ ব্যবধানে।
আগের চার ম্যাচের মতো সোমবার মিরপুরের উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য শুরুতে কঠিন ছিল না। যে কারণে দারুণ শুরুই করেছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও মেহেদী হাসান। ৪.৩ ওভারেই তারা স্কোর বোর্ডে তুলেছিলেন ৪২ রান। কিন্তু এরপরই দ্রুত ছন্দপতন হয় স্বাগতিকদের। ৬০ রানের মধ্যেই সাজঘরে ফেরেন মেহেদী, নাঈম ও সাকিব। সৌম্য সরকারকে নিয়ে অবশ্য চেষ্টা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু এ তারকা পারেননি সোমবার। অ্যাডাম জাম্পারের বল টেনে খেলতে গিয়ে বোলারের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৪ বলে ১৯ রান করে।
মাহমুদউল্লাহ ফিরলেও সৌম্য সরকার চেষ্টা করেছিলেন নিজেকে মেলে ধরার। শেষ পর্যন্ত তিনিও পারেননি। ক্রিস্টিয়ানের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৮ বলে ১৬ রান করে। শেষ দিকে তাই রান করতে সংগ্রাম করতে হয় আফিফ, মোসাদ্দেকদের। তারপরও টিম টাইগার্স করতে পারে ১২২ রান। জেতার জন্য হয়তো এ রানই তাদের কাছে যথেষ্টই মনে হয়েছিল।
অল্প পুঁজি নিয়েও শুরু থেকেই অজিদের চেপে ধরেন টাইগার বোলাররা। তাইতো ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নাসুমের হাত ধরে সাফল্য পায় স্বাগতিকরা। এ স্পিনার সরাসরি বোল্ড করে ফেরান আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানকে। এর কিছুক্ষণ পরেই মিচেল মার্শকে সাজঘরের পথ দেখান সেই নাসুমই। এ স্পিনার তাকে ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে।
দুই তারকাকে হারানোর ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা অবশ্য করেছিলেন অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ও বেন ম্যাকডারমোট। কিন্তু তাদের বেশিদূর যেতে দেননি সাকিব আল হাসান। ইনিংসের ৮ম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়েডকে বোল্ড করে ফেরান তিনি। এরপর টাইগারদের উইকেট উল্লাসে যোগ দেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি বল হাতে নিয়ে তুলে নেন ম্যাকডারমোটকে। সে সময় অজিদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪৮। এমন এক অবস্থায় টাইগার বোলাররা আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে ক্যারিকে ফেরান সাইফউদ্দিন। এরপর আর ৯ রানের মধ্যে সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন অজিদের বাকি ৫ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ৬০ রানের বিশাল জয় এনে দেন।
অস্ট্রেলিয়াকে লজ্জায় ডোবানের ম্যাচে ৩.৪ ওভারে মাত্র ৮ রানে সাকিব নেন ৪ উইকেট। এদিকে ১২ রানে ৩ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। আর নাসুম ৮ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ২টি উইকেট।
বল হাতে দারুণ করায় সোমবার ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান। শুধু তাই নয়, পুরো সিরিজে ব্যাট-বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে তিনিই হয়েছেন সিরিজ সেরা। সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২২/৮ (মেহেদী ১৩, নাঈম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সোহান ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪, সাইফ ০, মোস্তাফিজ ০; টার্নার ২-০-১৬-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, জাম্পা ৪-০-২৪-১, এলিস ৪-০-১৬-২, ক্রিস্টিয়ান ৪-০-১৭-২, সোয়েপসন ২-০-১৪-০)
অস্ট্রেলিয়া: ওভারে ৬২ (ক্রিস্টিয়ান ৩, ওয়েড ২২, মার্শ ৪, ম্যাকডারমোট ১৭, কেয়ারি ৩, হেনরিকেস ৩, টার্নার ১, অ্যাগার ২, এলিস ১, সোয়েপসন ১*, জাম্পা ৪; মেহেদী ৩-০-২০-০, নাসুম ২-০-৮-০, সাইফ ৩-০-১২-৩, সাকিব ৩.৪-১-৯-৪, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৯-০)

ফল: বাংলাদেশ ৬০ রানে জয়ী
সিরিজ: বাংলাদেশ ৪-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা: সাকিব আল হাসান