অজ্ঞাতনামা আসামি করে বংশাল থানায় আরও এক মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে ক্যাফে কুইন ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বংশাল থানায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। অবহেলার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ সাহা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বংশাল থানায় মামলাটি করা হয়।

বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার বাদী পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

বংশাল থানা সূত্রে জানা যায়, অবহেলার অভিযোগে ৩০৪(ক) ধারায় মামলা হয়েছে। মামলায় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, ভবনের গ্যাস-সংযোগ ও নকশাসহ কী কী গাফিলতি রয়েছে। ভবন মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের কোনো দায় আছে কি না, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এর আগে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় অপমৃত্যুর একটি মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ভবন মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান, ব্যবসায়ী আবদুল মোতালেব মিন্টু।

ডিএমপি জানায়, ভবন মালিক ওয়াহিদুর রহমান (৪৬) ও তার ভাই মতিউর রহমানকে (৩৬) গত ৭ মার্চ ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। একই দিন রাতে ঢাকা মেডিকেল  কলেজ এলাকা থেকে মোতালেব মিন্টুকে (৩৬) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। পরে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবন মালিকের অবহেলাজনিত দায় থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে ক্যাফে কুইন নামে পরিচিত ভবনে বিস্ফোরণের সূত্রপাতস্থল এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের সামনের অংশে বেজমেন্টের বেইজ বিম ও পিলার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণে ভবনের নিচতলা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এজন্য ভবনের বাইরে ও ভেতরে পরিদর্শন করে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট।

গতকাল ঘটনাস্থলে পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমান।

ভবনের বেজমেন্টের মূলত কোনো জায়গা থেকে এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত, সেই জায়গার সন্ধানে নেমেছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। কিন্তু তদন্তে এখনও বিস্ফোরণের সূত্রপাতস্থল খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আসলে ভবনের কোনো জায়গা থেকে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে, মূলত তার সন্ধানেই আমরা আলামত সংগ্রহের কাজ করছি। ভবনের কোনো জায়গায় সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। সেখানকার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভবনের কিছু জায়গা আমরা পরিদর্শন করেছি। দেখা গেছে, ভবনের গ্রিল ধরে নাড়ালে সেগুলো নড়ছে। সেই সঙ্গে দেয়ালও নড়তে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে এখনও কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য বা মিথেন গ্যাস রয়েছে কি না, তা জানতেও আলামত নেয়া হয়েছে।’

এএসপি মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘সংগ্রহ করা আলামতগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। সেগুলো বিধিমোতাবেক পরীক্ষা করে দেখা হবে। পরে বিশেষজ্ঞরা বিস্তারিত জানাতে পারবেন।’

এদিকে গতকাল সকালে ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত কলামে স্টিলের পাইপ দিয়ে অস্থায়ীভাবে ভবনটি দাঁড় করিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবনটির সামনের অংশের ক্ষতিগ্রস্ত কলামগুলোর পাশে ওই পাইপগুলো স্থাপন করা হয়েছে। নিচতলার মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ওই পাইপগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার সিদ্দিকবাজারের ক্যাফে কুইন ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০