পাখি সৌন্দর্যের উপাদান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভ‚মি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে শীতকালে ক্যাম্পাসে আসা অতিথি পাখি। এ ক্যাম্পাসে এমনিতেই হরেক পাখির আবাসস্থল রয়েছে। তবে কয়েক বছর ধরে এদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে ভিনদেশি নানা প্রজাতির পাখি।
শীতকালে ক্যাম্পাস এখন জেগে ওঠে পাখির কলতানে। শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলোয় চলে অতিথি পাখির বিচরণ। নিঃসংশয়ে ডানা মেলে নানা প্রজাতির অতিথি পাখি দলবেঁধে ছুটে বেড়ায় এক জলাশয় থেকে অন্য জলাশয়ে। খাবারের সন্ধানে কখনও জলাশয়ে ঝঁাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া, আবার কখনও উড়ে গিয়ে গাছের ডালে বসে বিশ্রাম নেওয়ার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় নিমিশে। মনে হয় এখানে পাখির মেলা বসেছে।
অতিথি পাখিরা ক্যাম্পাসে থাকে নভেম্বর থেকে পাঁচ মাসের অধিক সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় পুকুরে এদের আনাগোনা দেখা যায়। বিকালে এদের দেখা পাওয়া যেন যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি আস্বাদ। ভোরের আলো ফুটতেই এদের আনাগোনা আর ওড়াউড়ি ঝাঁপাঝাঁপি শুরু হয়ে যায়। এ-গাছ থেকে ও-গাছে, একটু পরই পানিতে, আবার আকাশে। কয়েকটি পাখি পালকের ভেতর মুখ গুঁজে রোদ পোহায়। অনেকে আবার মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় নামে।
বিকালে অনেকে পাখি দেখতে ভিড় করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল সংলগ্ন পুকুর, তাপসী রাবেয়া ও রহমতুন্নেছা হলের পেছনে ফিশারিজ বিভাগের গবেষণা পুকুরসহ ক্যাম্পাসের বেশ কয়েকটি জলাশয়ের কাছে।
পাখির মধ্যে চোখে পড়ে ছোট সরালি, বড় সরালি, ল্যাঞ্জাহাঁস, ভ‚তিহাঁস, ঝুঁটিহাঁস প্রভৃতি। প্রিয়জনকে নিয়ে সময় কাটানো আর পাখি দেখতে আসা নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম আহম্মেদ বলেন, অতিথি পাখিগুলো যেন যৌবনভরা ক্যাম্পাসটাকে আরও যৌবনদীপ্ত করেছে। ওরা আমাদের অতিথি! আনিশা জামান নামের আরেক শিক্ষার্থীর বলেন, দেশ থেকে নানা জাতের পাখি হারাতে বসেছে। অনেকে এ অতিথি পাখিদের ধরতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়।
আসিফ হাসান রাজু