Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 12:58 am

অতিমূল্যায়িত শেয়ার যৌক্তিক দরে আনতে হবে

ডিএসইর কিছু বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করা উচিত। সৃষ্টের পালন, দুষ্টের দমন। কেননা গত দুবছরে বাজারে এমন এমন শেয়ার ছিল, যেগুলো ১৫ টাকায় কেনাবেচা হওয়ার কথা সেগুলো ৭০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। আবার যেগুলো ৫০ টাকার সেগুলো ৪০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। এতে করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব বিষয়ে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট সংস্থা রয়েছে। কিন্তু তারা সেভাবে কাজ করেনি। তাদের কাজে আরও মনোযোগী হতে হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ আলী এবং সিনিয়র সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন।
মোহাম্মদ আলী বলেন, অনেক দিন ধরে বাজার নিম্নগতিতে রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই গতি আসছে না। এ বিষয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। আসলে বাজারে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকের সুদহার অন্যতম। যখন সুদহার কমে তখন পুঁজিবাজার চাঙা হয়। আবার যখন সুদহার বাড়ে তখন পুঁজিবাজার নিম্নগতিতে থাকে। কারণ সুদহারের সঙ্গে বাজার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ২০১৭ সালে সুদহার কম ছিল। তখন বাজারে একটি ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। এখন সুদহার অনেক বেশি। ফলে এর একটা প্রভাব পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এখন ডিএসইর কিছু বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করা উচিত। সৃষ্টের পালন, দুষ্টের দমন। কেননা গত দুবছরে বাজারে এমন এমন শেয়ার ছিল, যেগুলো ১৫ টাকায় কেনাবেচা হওয়ার কথা সেগুলো ৭০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। আবার যেগুলো ৫০ টাকা সেগুলো ৪০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। এতে করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব বিষয়ে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট সংস্থা রয়েছে। কিন্তু সেভাবে কাজ করা হয়নি। সময় এসেছে তাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।
মনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যাংক ডিপোজিট সংগ্রহ করতে পারছে না। বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্রের ওপর ধাবিত হচ্ছে। আসলে এ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে একটি নির্দিষ্ট সীমা রাখা উচিত। আবার সব ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় অতিরিক্ত বাড়ানো হয়েছে। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এটি ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে শুরু করে সব শাখা পর্যন্ত। পরিচালনা ব্যয় বাড়ানো মানে খরচ বাড়ানো। এ খরচ ব্যাংক তুলে আনতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। ডিপোজিটররা মনে করে ব্যাংকের অবস্থা ভালো নয় এবং তাদের মধ্যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়। আরেকটি হচ্ছে তারল্য সংকট। এখন ছয় থেকে সাতটি ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। ফলে যাদের হাতে দুই থেকে তিন লাখ টাকা রয়েছে তারাও ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাচ্ছে। এটা শুধু তারল্য সংকটে নয়। আরও একাধিক কারণ রয়েছে। বিশেষ করে ডিপোজিডের ওপর বিভিন্নভাবে কর বসানো হয়। এটি আগেও ছিল এখনও হচ্ছে। এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভিলেন্স এবং মনিটরিং অনেক দুর্বল। এ বিষয় দুটি যদি ভালোভাবে পরিচালনা করা যেত, তাহলে অনেক কিছুর সমাধান হয়ে যেত। এটা রাতারাতি করা সম্ভব নয়। তবে যদি ইতিবাচক ধারা চলমান থাকে তাহলে ধীরে ধীরে সমাধান চলে আসবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ