শেয়ার বিজ ডেস্ক: অতিরিক্ত মাত্রায় প্রক্রিয়াজাত করা খাবার গ্রহণে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানিয়েছেন ফরাসি গবেষকরা। কেক, চিকেন নাগেট ও বড় পরিসরে উৎপাদিত রুটিকে অতিরিক্ত প্রকিয়াজাতকৃত খাবারের মধ্যে রেখেছেন গবেষকরা। খবর বিবিসি।
এক লাখ পাঁচ হাজার মানুষের ওপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, যত বেশি এ খাবার গ্রহণ করা হয়, ক্যানসারের ঝুঁকি ততই বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের মধ্যে বড় পরিসরে উৎপাদিত প্যাকেটজাত রুটি, মিষ্টি বা মসলাযুক্ত স্ন্যাকস, চকোলেট বার, মিষ্টি, সোডা ও কোমল পানীয়, মিটবল, পোলট্রি ও ফিশ নাগেট, ইনস্ট্যান্ট নুডলস ও স্যুপ, ফ্রোজেন ও রেডি খাবার, চিনি, তেল এবং চর্বি দিয়ে তৈরি খাবার অন্যতম।
ফ্রান্সের একটি গবেষণা দল পাঁচ বছর ধরে এই গবেষণা চালায়। জরিপের অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীই ছিল মধ্যবয়সী নারী। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় উঠে আসে, খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের হার ১০ শতাংশ বাড়লে, ক্যানসারের ঝুঁকি ১২ শতাংশ বেড়ে যায়।
এই গবেষণা চালানোর সময় গড়ে ১৮ শতাংশ মানুষের খাবার ছিল অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত। গড়ে প্রতি বছর ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ৭৯ জনের ক্যানসার দেখা গেছে। প্রক্রিয়াজাত খাবারের হার ১০ শতাংশ বাড়ানোর ফলে বছরে প্রতি ১০ হাজারে অতিরিক্ত ৯ জনের ক্যানসার ধরা পড়ে।
এ জরিপ থেকে গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আগামী কয়েক দশকে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে।
তবে তারা জানান এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও বড় আকারের জরিপ ও গবেষণা চালানো প্রয়োজন। অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার ও ক্যানসারের মধ্যে নিশ্চিত কোনো সম্পর্ক এ গবেষণায় উঠে আসেনি।
ক্যানসার রিসার্চ ইউকের প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর লিন্ডা বল্ড বলেন, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণকারীদের ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে, আর ওজন বৃদ্ধির কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই খাদ্যাভ্যাস ও ওজনের পারষ্পরিক সম্পর্ক আলাদাভাবে বিচার করা কঠিন।
বল্ড বলেন, এই গবেষণা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা দেয়, তবে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খেলে স্বল্প পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণের বিষয়ে দুশ্চিন্তা করা উচিত নয়।”
বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা এ গবেষণার বিষয়ে ভিন্ন মত ও সমালোচনা প্রকাশ করেছেন। এ গবেষণা নিয়ে অনেকে বিতর্ক থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণই সর্বোৎকৃষ্ট।
