অতিরিক্ত ব্যয় না করে সঞ্চয় করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এখন থেকে আমাদের সবাইকেই কৃচ্ছ্র সাধন করতে হবে, সঞ্চয় করতে হবে, কোনো রকমের যেন আমরা কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত ব্যয় না করি। সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) ২৪তম জাতীয় সম্মেলন এবং ৪৩তম কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তৃতায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হওয়ায় দেশের জনগণকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এখন থেকে সবাইকে কৃচ্ছ্র সাধন করতে হবে, সঞ্চয় করতে হবে। আমরা যেন অতিরিক্ত ব্যয় না করি। আর উৎপাদন বাড়াতে হবে। নিজেদের খাদ্য উৎপাদনে সবসময় যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকতে পারি সে পদক্ষেপও আমাদের নিতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপীয় দেশগুলোর পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি সরবরাহে সমস্যায় পড়ছে। সেখানে তারা রেশনিং করছে। তারা পানি গরম করার ব্যবস্থা ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা রেখেছে। তাদের হিটিং সিস্টেম বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হলেও এখন যুদ্ধের কারণে হিমশিম খাচ্ছে। কাজেই আমাদেরও সেই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। যেহেতু বিভিন্ন পণ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেছে সেহেতু আমাদের কৃচ্ছ্র সাধন করতে হচ্ছে।

বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা ‘চমৎকার’ ভূমিকা রাখছেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সমস্ত প্রকল্প আমাদের একেবারে আশু শেষ করা প্রয়োজন, আমরা সেগুলো দ্রুত শেষ করব। যেগুলো এখনই প্রয়োজন নেই, সেগুলো আমাদের ধীর গতিতে হবে। আমরা অহেতুক টাকা ব্যয় করব না। কিন্তু যেগুলো আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো আমরা করব। এভাবে আমাদের পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে। তাহলেই বৈশ্বিক মন্দা আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এ যুগে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্সের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। এ লক্ষ্যেই কিন্তু আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ আজকে করেছি এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা ট্রেনিং ও শিক্ষার ব্যবস্থাও নিয়েছি। আমরা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, প্রযুক্তি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ, আঞ্চলিক যোগাযোগ অবকাঠামো তৈরি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্যতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার ওপর সব থেকে জোর দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে দেশ ও আন্তর্জাতিক বাজারে যে ধরনের পরিবর্তন সূচিত হবে, তা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আমাদের যে বিপুল শ্রমশক্তি রয়েছে তাদের এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, আর সেই যুক্ত করতে হলে তাদের ট্রেনিং দিতে হবে, শিক্ষিত করতে হবে এবং দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করতে হবে। এক সময় বিজ্ঞান শিক্ষার দিকে কারও কোনো আকর্ষণ না থাকলেও এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। মাত্র ৭ শতাংশ লোক কারিগরি শিক্ষা নিত। আজকে তা কিন্তু অনেক উন্নত হয়েছে। আমরা তার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট শিক্ষার্থীর ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে উন্নীত করে শিক্ষার মূলে স্রোতধারায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে নিয়ে আসারও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, আইডিইবির সভাপতি এ কে এম হামিদ এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০