প্রতিনিধি, নোয়াখালী: নোয়াখালী শহরের নিজ বাসায় তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সহপাঠীরা। গতকাল শনিবার বেলা ১টায় অদিতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহপাঠীরা একটি শোক র্যালি বের করে। জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেই র্যালিতে যুক্ত হন। এসময় তাদের হাতে ফাঁসির দাবি-সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে এসে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়।
নুসরাত ফারিয়া নামের এক সহপাঠী বলেন, আমরা আমাদের সহপাঠী অদিতার হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। সেই ফাঁসি জনসম্মুখে দেয়া হোক। যে নরপশু এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ঠিক একইভাবে তাকেও হত্যা করা হোক। আমার বোনের হত্যাকারীর বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।
মুমতাহিনা নামের আরেক সহপাঠী বলেন, আমার ফ্রেন্ডের সঙ্গে যেটা হয়েছে, তা যে নেক্সট টাইম আমাদের সঙ্গে হবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। আমাদের নিরাপত্তা কোথায় নিজ ঘরে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা কোথায় যাব। উই ওয়ান্ট জাস্টিস।
নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন নেসা বলেন, একজন শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। শিক্ষক হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারছি না। হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আন্দোলন চলতে থাকবে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধান আসামি গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। খুব দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচন করা হবে।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে ২২ সেপ্টেম্বর তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাসনিয়া হোসেন অদিতা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর ইউনিয়নের আবুল খায়ের পেশকার বাড়ির মৃত রিয়াজ হোসেনের মেয়ে। সে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিসহ (২৫) চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।