প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:
রাষ্ট্রায়ত্ত শেয়ারগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা খুবই জরুরি হয়ে গেছে। কারণ এই শেয়ারগুলো না এলে বাজারের গভীরতা বাড়ানো কষ্টকর হয়ে পড়বে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে এসব কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা হচ্ছে না। কাজেই এ বিষয়টির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের মধ্যে যে পর্যন্তু সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ না ঘটবে, সে পর্যন্তু এর ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে না। বাজারে যখন লেনদেন কম থাকে, তখন ‘জেড’ ক্যাটেগরি বা স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বেশি বাড়ে। আর ট্রেড ভলিউম বেশি হলে বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। কারণ অধিক মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়াতে হলে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে হয়। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়গুলো আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এমডি মো. আহছান উল্যাহ।
মো. আহছান উল্যাহ বলেন, পুঁজিবাজারে একেকটি ইস্যু সামনে আসে আর বাজারে নি¤œমুখী প্রবণতার সৃষ্টি হয়। এখন বাজারের একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে ডিএসইর (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার। ডিএসই শুধু একটি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম। এটির মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতারা শেয়ার কেনাবেচা করেন। কিন্তু স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারের বিষয়টি হচ্ছে, চীন ও ভারত দুটি সংস্থা এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী। এজন্য আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আছে। তারা অবশ্যই বিচার-বিশ্লেষণ করে বাজারের জন্য যেটি ভালো হবে, সেটিকেই বাছাই করবেন। কাজেই একে ইস্যু করে পুঁজিবাজারকে খারাপ করার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে হয় না। বুদ্ধিমান ক্রেতারা কিন্তু ঠিকই শেয়ার সংগ্রহ করছেন এখন। অনেকেই আবার বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত। বাজার যখন নিম্নমুখী থাকে, তখন তাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করে। যে কারণে বাজারে একটি নেতিবাচক প্রভাব আমরা লক্ষ্য করছি। ২০১০-১১ সালের পর থেকে বাজারের এমন অবস্থা আগেও কয়েকবার হয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে বাজারের সঙ্গে জড়িত, তারা এ ব্যাপারে জানেন। ফলে বাজারের এমন অবস্থায় আমাদের আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। তবে কোনো শেয়ারে বিনিয়োগের আগে ওই শেয়ারের বিভিন্ন দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করতে হবে। বাজারে প্রতিটি শেয়ারের দামই ওঠানামা করে। তাই বিনিয়োগের আগে আমাদের দেখতে হবে বাছাই করা শেয়ারটির দর স্বাভাবিক, নাকি অস্বাভাবিক। যদি আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করি, তাহলে কিন্তু পুঁজি হারানোর সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত শেয়ারগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা খুবই জরুরি। এ শেয়ারগুলো না এলে বাজারের গভীরতা বাড়ানো কষ্টকর হয়ে পড়বে। রাষ্ট্রায়ত্ত শেয়ারগুলো বাজারে আনার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো অদৃশ্য কারণে এসব কোম্পানি শেয়ার অফলোড করছে না। বিষয়টি বাজার-সংশ্লিষ্ট সবাই কম-বেশি জানেন। কাজেই এ বিষয়টির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের মধ্যে যে পর্যন্ত সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ না ঘটবে, সে পর্যন্ত হয়তো এর ইতিবাচক ফল আমরা দেখতে পাব না। তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের শেষ কার্যদিবসে ৫২১ কোটি টাকা লেনদেন হয়। কিন্তু রোববার সেটি কমে ৪৪০ কোটি টাকা হয়েছে। এ বছর বাজারে সর্বনিম্ন লেনদেন হয় ৩০৮ কোটি টাকার মতো। ফলে যখন ট্রেড ভলিউম কম থাকে, তখন ‘জেড’ ক্যাটেগরি বা স্বল্পমূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। আর ট্রেড ভলিউম বেশি হলে বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। কারণ অধিক মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়াতে হলে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে হয়।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম