Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 11:43 am

অধিক মুনাফায় চাঙা হচ্ছে আইপিও মার্কেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় সেকেন্ডারি মার্কেটের পাশাপাশি দীর্ঘদিন পর চাঙা হয়ে উঠেছে প্রাইমারি বা আইপিও মার্কেট। দীর্ঘদিন পর আইপিও’র শেয়ার থেকে সন্তোষজনক মুনাফা পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান থেকে ভালোই মুনাফা অর্জন করেছেন তারা, যে কারণে এই মার্কেটের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। এর জের ধরে আইপিওতে প্রতিযোগিতা বাড়ছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, পুঁজিবাজারে সর্বশেষ তালিকাভুক্ত কোম্পানি দুটি হচ্ছে বিবিএস কেব্ল্ ও নূরানী ডায়িং। এর মধ্যে প্রথম কার্যদিবসেই বিবিএস কেব্লের ১০ টাকার শেয়ার বিক্রি হয় ৯৪ টাকায়। তালিকাভুক্তির কয়েক কার্যদিবসের মধ্যে এর দর ১০০ টাকা অতিক্রম করে। এর আগে তালিকাভুক্ত নূরানী ডায়িং থেকেও ভালো মুনাফা পান তারা। প্রথম কার্যদিবসে এ শেয়ার ২১ টাকায় লেনদেন হলেও কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিটি শেয়ার বিক্রি হয় ২৭ টাকায়।

অন্যদিকে এর আগে তালিকাভুক্ত প্যাসিফিক ডেনিমসের ১০ টাকার শেয়ার প্রথম দিনে ২৭ টাকায় লেনদেন হয়। একইভাবে ফরচুন শুজের শেয়ার প্রথম দিকে কেনাবেচা হয় ৬০ টাকার ওপরে। বস্ত্র খাতের অন্য কোম্পানি সেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারেও ভালো চাহিদা দেখা যায়। প্রথম কার্যদিবসে এ শেয়ার লেনদেন হয় ৫৩ টাকায়।

এদিকে শেয়ারের ভালো দর পাওয়ায় বেড়ে গেছে আইপিওর প্রতিযোগিতাও। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নূরানী ডায়িংয়ের প্রতিটি লটের বিপরীতে আবেদন পড়ে ২৮টি করে। বিবিএস কেব্লের বেলায় প্রতিযোগিতা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮টিতে। এর আগে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আইপিও আবেদনে প্রতিযোগিতার হার লক্ষ করলে দেখা যায়, প্যাসিফিক ডেনিমসের আইপিওতে একটির বিপরীতে আবেদন জমা পড়ে ২৭টি। অন্য কোম্পানি ফরচুন শুজের ক্ষেত্রে এই প্রতিযোগিতা আরো বাড়ে। এই কোম্পানির আইপিওতে প্রতিটির বিপরীতে জমা পড়ে ৪২টি আবেদন। অন্য কোম্পানি সেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষেত্রে এই প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়। এই কোম্পানির প্রতিটি আইপিও’র বিপরীতে ৫৪টি আবেদন জমা পড়ে।

তবে আইপিওর লটারিতে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি নাÑতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেক বিনিয়োগকারী। তারা জানান, এটা কতিপয় সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে গেছে। একই ব্যক্তি বিভিন্ন নামে শত শত আবেদন করে ছিনিয়ে নিচ্ছেন লটারি। ফলে অন্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তাছাড়া আইপিও’র একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কাছে। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা খুব একটা লটারিবিজয়ী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে প্রাইমারি মার্কেট চাঙ্গা থাকলেও নতুন কোম্পানির শেয়ারগুলো যেন অতি মূল্যায়িত না হয়, সেদিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতো কোনো শেয়ার যদি বাজারে এসেই অতিমূল্যায়িত হয়ে যায় তবে সেই শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘আইপিওর শেয়ার কেনার সময় বিনিয়োগকারীদের সচেতন হওয়া দরকার। একটি শেয়ারের কত মূল্য হতে পারে, সেটা না ভেবে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থা কেমনÑসেদিকে নজর রাখা দরকার। তা না হলে বিনিয়োগকারীদের একসময় লাভের বদলে লোকসানের হিসাব কষতে হতে পারে। তাই আগে থেকে হিসাবি হলে তারা নিজেরাই নিজেদের লোকসান পোষাতে পারেন।’