Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:47 pm

অনলাইনে প্রবেশে ওটিপি ভ্যাট আহরণকে গতিশীল করুক

অনলাইন জীবনযাত্রাকে যত সহজ করেছে, কয়েকটি বিষয় ভোগান্তিও বাড়িয়েছে। ভ্যাট ও ট্যাক্সের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড জালিয়াতি করে সফটওয়্যারে অনুপ্রবেশ করে অনেক তথ্য হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকিও চলে। এতে রাজস্ব আহরণে করতে না পেরে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাণিজ্য-সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, বিনিয়োগকারী, কমার্শিয়াল ম্যানেজার, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কাস্টম ও জেটি সরকারÑকোনো না কোনো পর্যায়ে যোগসাজশে অপকর্ম সংঘটিত হয়। একজনের ইউজার আইডি ব্যবহারকারীর অগোচরেও ব্যবহার হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার আইডি ও পাসওয়ার্ড চুরি, প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়ায় কৌশলগত উপায়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর সফটওয়ার সিস্টেমে প্রবেশ করে। সিস্টেম্যাটিক শুল্কায়ন কিংবা কর আদায় দেখিয়ে বানোয়াট, ভুয়া অসত্য, ভিত্তিহীন দলিলাদি দাখিল করে পণ্য চালান অবৈধভাবে খালাস করা হয় কিংবা ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়। জালিয়াতির মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের ভিত্তিতে এনবিআর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তদন্তও চালিয়েছে। সেসব তদন্তে প্রায় ক্ষেত্রেই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে বাস্তবানুগ ব্যবস্থা নিতে না পারায় এক ধরনের অস্বস্তিও আছে এনবিআরে।

গতকাল শেয়ার বিজে ‘এলসিতে যাবে বিআইএনের তথ্য, ভ্যাট অনলাইনে প্রবেশে ওটিপি’ শীর্ষক প্রধান প্রতিবেদন ভ্যাট ফাঁকি রোধে আশা জাগানিয়া খবর হিসেবেই বিবেচিত হবে বলে আমরা মনে করি। কেননা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) চালু হলে ভ্যাট অনলাইন সিস্টেমের অপব্যবহার ও তথ্য জালিয়াতি রোধ হবে। সেবাগ্রহীতার ব্যবহার্য মোবাইল ফোনে পাসওয়ার্ড যাওয়ায় এটি যেমন সুরক্ষিত থাকবে, তেমনই অপব্যবহার হলে দায় তার ওপর বর্তাবে। এ পদ্ধতিতে ভ্যাট অনলাইনে একজনের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্যজন ব্যবহার করার কোনো সুযোগ থাকবে না। ফলে আশা করা যায়, অন্যের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সিস্টেমে জালিয়াতিও করা সম্ভব হবে না। সিস্টেমে ইউজার আইডি ও  সঠিক পাসওয়ার্ড দিলেই বিজনেস শনাক্তকরণ নম্বরে (বিআইএন) দেয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নম্বরে ওই ওটিপি যাবে।

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিয়ম মোতাবেক ভ্যাট দেবে, এটিই স্বাভাবিক। এর ভেতরেও থেকে দেখা যায়, এক-দুটি প্রতিষ্ঠান অনিয়মের আশ্রয় নেয়। কিন্তু ভ্যাট অনলাইনে প্রবেশে ওপিটি চালু হওয়ায় সেটিও কেউ করতে পারবে না। এতে ‘অনেক অফিসের চেয়ার-টেবিলও ঘুষ খায়’ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সেবাপ্রত্যাশীর যথাযথ সেবা পাওয়া নিশ্চিত হয়েছে। ফাঁকি বন্ধ হওয়ার ফলে রাষ্ট্রও উপযুক্ত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে না। এমন সফটওয়্যার সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রে চালুর উদ্যোগ নিতে পারে এনবিআর। আবেদন, যাছাই লেনদেন প্রভৃতি অনলাইনে এলে কম সময়ে তা নিষ্পত্তি করার সুযোগ তৈরি হয়। তাই নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট থাকাও জরুরি। তাহলেই ভ্যাট অনলাইনে প্রবেশে ওটিপি ব্যবহার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে সহায়তা করতে সক্ষম হবে।