Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 12:37 pm

অনাগ্রহে সাপ্তাহিক পতনে শুধু ব্যাংক খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহজুড়ে উত্থান ও পতনের মাধ্যমে গত সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে সূচক কিছুটা বেড়েছে। এতে গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে প্রধান সূচক বেড়েছে। সেইসঙ্গে গত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ৫২ দশমিক ৭০ শতাংশ। তবে সপ্তাহে লেনদেন করা বেশিরভাগ কোম্পানিগুলোর ইউনিট ও শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। আলোচিত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ না থাকায় শুধু ব্যাংক খাতের শেয়ারদরে পতন হয়েছে। ফলে গত সপ্তাহে শুধু এ খাতেই শেয়ারদর কমেছে। এদিকে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি শেয়ারদর বেড়েছে আইটি খাতে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার। গত সপ্তাহে শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে রয়েছে পাট খাত এবং সেবা ও আবাসন খাত।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়া আইটি খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। খাতটিতে গত সপ্তাহে ৬৫১ কোটি টাকার বেশি বা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে, যা লেনদেনের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল। শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে গত সপ্তাহে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ খাত। খাতটিতে গত সপ্তাহে ১০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। আলোচ্য খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ বা ২৮৪ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে শেয়ারদর ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে ছিল পাট খাত। এ খাতে গত সপ্তাহে ২১ কোটি টাকার বেশি বা ডিএসইর মোট লেনদেনের দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। সেবা খাতে গত সপ্তাহে ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধির মাধ্যমে চতুর্থ স্থানে ছিল। গত সপ্তাহে খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ২০ শতাংশ বা ২২৯ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে শুধু পতন হওয়া ব্যাংক খাতের শেয়ারদর কমেছে দশমিক ১০ শতাংশ। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৯৮ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে শেয়ারদর কমা বা বৃদ্ধির দিক থেকে বস্ত্র খাত, মিউচুয়াল ফান্ড খাত, আর্থিক খাত এবং টেলিকমিউনিকেশন খাতে কোনো পরিবর্তন ছিল না।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের মধ্যে বিবিধ খাতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে। এ খাতে গত সপ্তাহে ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৮৩৭ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে খাতটিতে গত সপ্তাহে শেয়ারদর বেড়েছে দশমিক ৫০ শতাংশ। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ২০ শতাংশ বা ৮৩১ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এর বিপরীতে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর বেড়েছে দশমিক ২০ শতাংশ। গত সপ্তাহে লেনদেনে চতূর্থ স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। এ খাতে গত সপ্তাহে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে কম। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ১২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির। আর ২২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৪ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ। তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১১ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ শতাংশ।

এসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ্র ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৩২ শতাংশ। সূচকে মিশ্র প্রবণতা থাকলেও ডিএসইতে বেড়েছে গড় লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৯৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭১৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৭৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বা ৫২ দশমিক ৭২ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৫৮৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ৮৮৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা ৫২ দশমিক ৭২ শতাংশ।