হাসানুজ্জামান পিয়াস: দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল বিমা খাতের কোম্পানি। ফলে টানা বেড়েছে এই খাতে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর। তবে সম্প্রতি হঠাৎ করেই এই খাতের শেয়ারের প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বিমা খাতের শেয়ারের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হওয়ায় মোট লেনদেনে এই খাতের অবদান অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে। মোট লেনদেনে এ খাতটির অবদান নেমে এসেছে ১০ শতাংশের নিচে।
গতকালের বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এদিন মোট লেনদেনে বিমা খাতের অবদান ছিল পাঁচ দশমিক ৭২ শতাংশ। এদিন বেশিরভাগ বিমা খাতের কোম্পানিতেই ছিল ক্রেতার আকাল। যে কারণে দিন শেষে লেনদেনে পিছিয়ে গেছে এই খাত। গতকাল এ খাতের মোট ৫৪ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। মাত্র চারটির দর বেড়েছে আর তিনটির অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি বস্ত্র খাতে ফিরেছেন বিনিয়োগকারীরা। অন্যান্য খাত ছেড়ে তাদের আগ্রহের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এ খাতটি। এ কারণে ধীরে ধীরে খাতটির শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন তারা। ফলে মোট লেনদেনেও খাতটির অবদান ক্রমে বাড়ছে। গতকালের বাজারেও এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকালের বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা গেছে, সকাল থেকে অন্যান্য খাতের তুলনায় এ খাতের শেয়ারে চোখ ছিল বিনিয়োগকারীদের। এ কারণে একযোগে বাড়তে দেখা যায় এ খাতে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। শেষ দিকে বিক্রয় চাপ বেড়ে যাওয়ায় ১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমতে দেখা যায়। দর বাড়তে দেখা গেছে ৩৯টি আর বাকি ৫টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। দিন শেষে মোট লেনদেনেও সবার শীর্ষে চলে আসে খাতটি। এদিকে গতকাল দিন শেষে মোট লেনদেনে বস্ত্র খাতের একক অবদান ছিল ২৮ শতাংশের বেশি। পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতটি গতকালের লেনদেনে প্রায় ১৫ শতাংশ অবদান রাখে। এছাড়া বিবিধ খাত লেনদেনে উল্লেখযোগ্যহারে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।
বিনিয়োগকারীদের বস্ত্র খাতের শেয়ারে ঝুঁকে পড়ার প্রধান কারণ শিগগিরই এ কোম্পানিগুলোর পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে আর এ সভায় ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা দেবে। ফলে যারা পুঁজিবাজারে রয়েছে তাদের অনেকে খাতটিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।
এদিকে গতকালসহ মোট পাঁচ কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বৃদ্ধি পায় ১২ পয়েন্ট। দিন শেষে সূচক স্থির হয় ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্টে। তবে গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন সামান্য হ্রাস পেয়েছে। দিন শেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় এক হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৬১ কোটি ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। এ মার্কেটে গতকাল লেনদেনে অংশ নেয় ৪২টি কোম্পানি।