নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বিঘ্নে নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষে সবাইকে কেন্দ্রে এসে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
একই সঙ্গে ভোট সুষ্ঠু করতে সব ধরনের অনিয়ম ও কারচুপি ঠেকাতে কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে অনিয়ম হলে প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির মধ্যে গতকাল শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
সন্ধ্যা ৭টায় তার এ ভাষণ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়।
সিইসি বলেন, কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। ভোটের দিন জনগণকেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ধরনের অনিয়ম-অনাচার প্রতিহত করার আহ্বান জানান তিনি।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন কেবল ভোট গ্রহণ শুরুর অপেক্ষা।
তিনি বলেছেন, সরকার আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি বারংবার ব্যক্ত করেছে। কমিশনও তার আয়ত্তে থাকা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে এবং সরকার থেকে আবশ্যক সব সহায়তা গ্রহণ করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার বিষয়ে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করার প্রতিশ্রুতি বারংবার ব্যক্ত করেছে।
তবে সব দল ভোটে না আসায় ভোটে সেরকম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মতবিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাক্সিক্ষত নির্বাচনী সর্বজনীনতা প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। তারপরও ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে। সর্বমোট এক হাজার ৯৭১ প্রার্থী ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় মর্মে আখ্যায়িত করা যাবে না।
আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে প্রচার শেষ হয়েছে। ভোটের সামগ্রী পৌঁছে যেতে শুরু করেছে কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে। বেশিরভাগ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে।
এর আগে ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার জন্য জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণ দিয়েছিলেন সিইসি।
সেদিনও তিনি সব দলকে ভোটে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আর ভোটে আসেনি। শেষ পর্যন্ত ২৮টি দল ভোটে অংশ নিচ্ছে, মোট প্রার্থী রয়েছেন এক হাজার ৯৭০ জন। এবার অনেক স্বতন্ত্রও অংশ নিচ্ছেন।
তফসিল ঘোষণার দিনও ভোটারদের কেন্দ্রে নির্ভয়ে এসে স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেছিলেন, সবার অংশগ্রহণই নির্বাচনকে এসব অনিয়ম থেকে দূরে রাখতে পারে। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হতে পারে কেবল সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমেই।