নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে উদ্ভাবন চলছে। এই ধারাবাহিকতায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ভাইরাসটি শনাক্তকরণের কিট উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশি বায়োটেক কোম্পানি ওএমসি হেলথকেয়ার (প্রা.) লিমিটেড। করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত নিয়ম শতভাগ মেনেই তৈরি করা হয়েছে এই আরটি-পিসিআরভিত্তিক শনাক্তকরণ কিট।
বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ (ডিজিডিএ) থেকে গত ৩ জানুয়ারি ২০২১ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন এবং সরবরাহ করার অনুমোদন পেয়েছে কিটটি। বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাসের কিট উদ্ভাবন করে ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন পেয়েছে।
তথ্যমতে, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউএস সিডিসি নির্দেশিকা অনুযায়ী, নির্মিত ওএমসি হেলথকেয়ারের উদ্ভাবিত কিটটি কভিড-১৯ ভাইরাসের মিউটেশনের ধরনটি শনাক্তকরণে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম। ফলে এই কিটটি কভিড-১৯-এর কার্যকর শনাক্তকরণের এবং ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে।
কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করতে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই; ফলে বাংলাদেশে সুলভ মূল্যে প্রচুর পরিমাণ টেস্ট কিট প্রয়োজন। বিদেশ থেকে আনা কিট ভোক্তা পর্যায়ে যে পরিমাণ খরচ হয়, এর চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম খরচে ওএমসি হেলথকেয়ারের কিট দিয়ে টেস্ট করা যাবে।
অন্যদিকে মহামারির কারণে অন্য দেশ থেকে সময়মতো চাহিদা অনুযায়ী কভিড-১৯ টেস্ট কিট আমদানি করা বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে উৎপাদিত হলে কভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিটের কোনো স্বল্পতা থাকবে না, বরং দেশের চাহিদা মিটিয়ে তা বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে ওএমসি হেলথকেয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহুল কবির বলেছেন, ‘আমাদের প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ হাজার কভিড-১৯ আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে এবং প্রয়োজনে এই সক্ষমতা বাড়ানো যাবে, কিটের সর্বোচ্চ গুণগতমান নিশ্চিত করতে আমরা স্বয়ংক্রিয় অটোমেটিক প্রডাকশন লাইন ব্যবহার করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ঔষধ প্রশাসন এবং আইইডিসিআরের সর্বাত্মক সহযোগিতায় কিটটির অনুমোদন দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।
আশা করা যায়, ওএমসি হেলথকেয়ার কর্তৃক উদ্ভাবিত এই আরটি-পিসিআর কিট কভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় দেশের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং বিশ্বদরবারেও বাংলাদেশের অবস্থান আরও সমৃদ্ধ করবে।