Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 8:40 pm

অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস হবে

শেয়ার বিজ ডেস্ক:উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে বলেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাদে অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশবিরোধী, খুনি, মৌলবাদী চক্র, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে গণভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়, জনগণের জীবনমান উন্নত হয়Ñসেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে এগিয়ে যাচ্ছে, বিদেশে বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদা বেড়েছে অনেক। ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হয়েছে, আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা মানুষের মন জয় করেই ক্ষমতায় এসেছি। আর ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছি।

সরকার প্রতিটি জেলায় পরিকল্পিত উন্নয়ন করেছে বলে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর পঁচাত্তর থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে অন্যায়-অত্যাচার করা হয়েছে, আমরা তার প্রতিশোধ নিইনি। আমরা অন্যায়ের জবাব দিচ্ছি উন্নয়ন করে। আজ গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা একেবারে নেই বললেই চলে। সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে গত সাড়ে ১৪ বছরের উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্য বেশি করে প্রচার করতে হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার ‘যৌক্তিকতা’ মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলকে আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি দলের দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা যেন অবহেলিত না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, আমার একমাত্র শক্তি আমার সংগঠন। সাংগঠনিক শক্তি না থাকলে বড় কোনো অর্জন সম্ভব হয় না। তাই দলকে সুসংগঠিত করতে হবে তৃণমূল পর্যায় থেকে। বাংলাদেশকে নিয়ে নানা চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই চায় না আমাদের দেশটি এগিয়ে যাক।

আন্তর্জাতিক চক্রান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের উসকানিতে বিএনপি আজ লাফাচ্ছে, তারা কিন্তু তাদের ক্ষমতায় বসাবে না। তারা শুধু তাদের ব্যবহার করবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে বারবার ধ্বংস করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে চেষ্টা কখনোই সফল হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ মানুষের মন জয় করে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

দলকে আরও শক্তিশালী করা দরকার বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাবা-মা-ভাই সবাইকে হারানোর পর আওয়ামী লীগই আমার পরিবার। বাংলাদেশের জনগণ আমার সব শক্তি। তারাই আমার একমাত্র ভরসা। তাদের জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা সবচেয়ে বেশি মানুষের পাশে থেকে অবদান রেখেছে।

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আরাফাতকে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম, নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই মিলে কাজ করবেন।

বিএনপির নির্বাচন মানে ‘দশটা হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা’ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও ভোটারবিহীন নির্বাচন করেনি। ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাহউল হক সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।