অফিসের অনুমোদন নিয়ে অবৈধভাবে চলছিল কাচ্চি ভাইসহ বেশকিছু রেস্টুরেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বেইলী রোডের আগুন লাগা ভবনটিতে ছিল না রেস্টুরেন্টের অনুমোদন। অফিসের অনুমোদন নিয়ে অবৈধভাবে চলছিল কাচ্চি ভাইসহ বেশকিছু রেস্টুরেন্ট। ভবনটিতে ছিল না ফায়ার এক্সিট। ফলে আগুন লাগলেও অনেকে বের হতে পারেন নাই।

রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রিন কোজি কটেজ নামের ওই ভবন অফিস হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন ছিল, কোনো রেস্টুরেন্ট বা খাবারের দোকান হিসেবে নয়।’

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেইলি রোডের যে বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লেগেছিল, সেখানে রেস্টুরেন্ট করার অনুমোদন ছিল না। অথচ ছয়তলা ভবনটিতে একটি জুস বার এবং একটি চা-কফির দোকানসহ আটটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়াও, কিছু মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও কাপড়ের দোকানও ছিল।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘৭.৫ কাঠা জমির উপর এ ভবনের অনুমোদন নেয় হামিদা খাতুন গং ও আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ। আট তলা বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ভবনটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে অফিস হিসেবে ব্যবহারের জন্য, কোনও রেস্টুরেন্ট কিংবা খাবারের দোকান নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবনটি শুধু অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন ছিল। রেস্টুরেন্ট, শোরুম (বিক্রয়কেন্দ্র) বা অন্য কিছু করার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি।’

আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনটি একটি সিঁড়ি দেখিয়েই অনুমোদন নেয়। এটি বহুতল ভবন নয়। যদি ১০ তলার বেশি হতো তাহলে সেটি বহুতল ভবন হতো।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি ফ্লোরের স্পেসগুলো কিনে তারা বেশি লাভের আশায় রেস্টুরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে। এটা আইনের লঙ্ঘন। তবে ফায়ার সার্ভিসের আইন অনুযায়ী ছয় তলার বেশি উচ্চতার ভবনে ফায়ার এক্সিট থাকতে হবে। দুটি সিঁড়ি রাখতে হবে।’

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সাত সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানা গেছে।

এদিকে শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুরে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে উপস্থিত হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, এই ভবনে ফায়ার সেইফটি প্ল্যান ছিল কি না আমরা তদন্তে দেখতে চাই। এছাড়া ভবন নির্মাণ করতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছিল কি না তাও আমরা তদন্ত করে দেখবো। আমরা তদন্তে দেখতে পাবো কীভাবে আগুন লেগেছে এবং এখানে কারো কোনো গাফিলতি ছিল কি না।

ভবনটিতে অফিস করার অনুমতি ছিল। কিন্তু অফিস না করে এখানে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টসহ দোকান করা হয়েছে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা শুধু ফায়ার সেইফটি প্ল্যানটা দেখি। এ বিষয়ে রাজউক বলতে পারবে। তবে এ বিষয়টি আমরাও তদন্ত করে দেখবো।

আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, এই ভবনটিকে ইতঃপূর্বে অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা মনে করি যারা ব্যবসা করেন, তাদের সবাইকে অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০