অবণ্টনকৃত মুনাফার তথ্য চেয়ে ব্রোকারেজ হাউসকে চিঠি

আতাউর রহমান: দেশের পুঁজিবাজারে মধস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউসের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের (সিসিএ) অবণ্টনকৃত মুনাফার তথ্য চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সেই সঙ্গে সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিলে যথাযথভাবে অর্থ জমা হয়েছে কি না এবং এর বর্তমান স্থিতির ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ডিএসইর সব ট্রেকহোল্ডারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ট্রেকহোল্ডাদের আগামী ১১ মের মধ্যে তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

ট্রেকহোল্ডারদের দেয়া ডিএসইর চিঠিতে বলা হয়েছে, এর আগে এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা  বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসইর কাছে ‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড) আইন, ২০১৪’ অনুযায়ী যেসব উৎস থেকে তহবিলে অর্থ জমা হওয়ার বিধান রয়েছে, সেসব উৎস থেকে তহবিলে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যথাযথভাবে অর্থ জমা হয়েছে কি না এবং এর বর্তমান স্থিতির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের জুনে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সিসিএ হিসাবের অবণ্টনকৃত মুনাফা থেকে অর্থ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে জমা করার বিধান করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জমাকৃত অর্থের ব্যবহার-সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। এজন্য চিঠিতে উল্লেখিত ছক অনুযায়ী আগামী ১১ মের মধ্যে সে তথ্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিএসই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুর রহমান মজুমদার শেয়ার বিজকে বলেন, ট্রেকহোল্ডারদের কাছে সিসিএ হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর তা বিএসইসির কাছে জমা দেয়া হবে।

এর আগে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিলের (ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড) ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। প্রতি বছর এ বোর্ডর পুনর্গঠন করা হয়ে থাকে। এরই ধারবাহিকতায় ডিএসই ও সিএসইর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিলের ট্রাস্টি বোর্ডে নতুন দুই চেয়ারম্যান নিয়োগের অনুমতি দেয় বিএসইসি। এদিকে এ বিষয়ে জানিয়ে ডিএসই ও সিএসইর ব্যবস্থপনা পরিচালক বরাবর পৃথক দুটি চিঠি আলাদাভাবে পাঠানো হয়।

ডিএসইকে দেয়া বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন স্টক এক্সচেঞ্জ বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিল প্রবিধান, ২০১৪-এর প্রবিধান ৫ অনুযায়ী ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিলের চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. আবদুস সামাদকে মনোনয়নের অনুমোদন দিয়েছে।

সেই সঙ্গে সিএসইকে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এবিএম আবু নোমানকে সিএসইর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে। এ বিষয়ে তাকে জানানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

তথ্যমতে, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকার ও ডিলারদের কাছ থেকে পাওয়া বার্ষিক তালিকাভুক্ত ফি’র একটি অংশ এ তহবিলে জমা করা হয়। এ ছাড়া পুঁজিবাজারে লেনদেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া ফি’র একটি অংশও এ তহবিলে জমা করা হয়ে থাকে।

জানা গেছে, কোনো ব্রোকারেজ হাউস দেউলিয়া হয়ে গেলে বা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিংবা তাদের জমা করা অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এ তহবিল থেকে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়ে থাকে।

এর আগে বন্ধ বা দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ডিএসইর সদস্যভুক্ত বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের এ তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। এর ধারাবাহিকতায় ডিএসই তাদের ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড বা অন্য কোনো উৎস থেকে কোম্পানিটিকে ২০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয় বিএসইসি। ওই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই কোম্পানিটিকে ২০ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০