শেয়ার বিজ ডেস্ক: জ্বালানি সংকটে বিপর্যস্ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তেল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাভিগডর লিবারম্যান এক নির্দেশনায় জানিয়েছেন, গাজায় আর কাতার থেকে আমদানিকৃত তেল প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। গত শুক্রবার তার কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনা সদস্য ও বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার জবাবে তেল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর: রয়টার্স।
লিবারম্যান যেদিন এ নির্দেশ দিয়েছেন সেদিনই চলমান গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন কর্মসূচিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে ছয় ফিলিস্তিনি। চলমান মানবিক বিপর্যয়ের শোচনীয় অবস্থা ঠেকাতে জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় ইসরাইলের ভেতর দিয়ে গাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রে তেল সরবরাহ শুরু করেছিল কাতার।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় গত ৯ অক্টোবর সেখানে জ্বালানি সরবরাহ শুরু করে কাতার। জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দক্ষিণ গাজার কারাম আবু সালেম বর্ডার ক্রসিং অতিক্রম করে জ্বালানিবাহী ছয়টি ট্রাক গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি পৌঁছে দেওয়া শুরু করে। এসব ট্রাকে চার লাখ ৫০ হাজার লিটার জ্বালানি ছিল। কাতারি জ্বালানিতে গাজার বিদ্যুৎ সরবরাহ আংশিকভাবে বাড়বে বলেও জানায় গাজার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই শুক্রবার এসব তেল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিল ইসরাইল।
শুক্রবার লাইবারম্যানের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরাইল এমন পরিস্থিতি সহ্য করবে না যেখানে একদিকে তেলবাহী ট্যাঙ্কার প্রবেশ করতে দেওয়া হবে আর অন্যদিকে ইসরাইলি সেনা সদস্য ও বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং সহিংসতার ব্যবহার চলবে’। মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি জনতার প্রতিরোধকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা বলে প্রচার চালিয়ে থাকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে ফিলিস্তিনের পক্ষে জোরাল অবস্থান নেওয়া দেশগুলোর অন্যতম কাতার। বিশেষ করে অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে অঞ্চলটিতে কাজ করছে দোহা। তবে ২০১৭ সালের জুনে সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধে গাজা উপত্যকার প্রতি কাতারি সমর্থন অব্যাহত রাখা দৃশ্যত কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা, সৌদি আরব চায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করুক কাতার। তবে হামাসকে মুক্তিকামী গাজাবাসীর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধি মনে করে দোহা। কয়েক মাস ধরে গাজার সীমান্ত এলাকায় চলা বিক্ষোভ প্রশমিত করতে তেল সরবরাহ শুরু করে কাতার।
জাতিসংঘের তরফে হুশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ইসরাইলের ১১ বছর ধরে আরোপিত অবরোধের কারণে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
