ক্রীড়া প্রতিবেদক: করোনা পরিস্থিতির তেমন উন্নতির লক্ষণ নেই। তারপরও ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট দিয়ে ফিরছে মাঠের ক্রিকেট। যা দেখে অনুপ্রানিত হচ্ছে অন্যান্য দেশের ক্রিকেটাররা। ব্যাপারটি নজরে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। তাই সংস্থাটি আগামী সপ্তাহে ক্রিকেটারদের জন্য বন্ধ থাকা মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের দুয়ার খুলে দিচ্ছে।
আগামী সপ্তাহ থেকে হোম অব ক্রিকেটে ব্যক্তিগত ফিটনেস অনুশীলনের জন্য আসতে পারবেন টাইগাররা। স্বাভাবিক চিত্র না ফিরলেও কিছুটা হলেও ভাঙবে স্টেডিয়ামটির নিস্তব্ধতা। এরইমধ্যে নির্বাচকদের বিবেচনায় থাকা পুলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ। মিরপুরে ফিটনেস অনুশীলন করতে আগ্রহীদের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে।
দীর্ঘ চার মাস পর ফের ক্রিকেটাররা মিরপুরে ফিটনেস অনুশীলনের জন্য জিমনেসিয়াম ছাড়াও প্রয়োজনীয় সবকিছুই ব্যবহার করতে পারবেন। তারা রানিং করতে পারবেন বিসিবির একাডেমি মাঠ ও শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মুল মাঠে।
করোনার কারণে গত ১৬ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের ক্রিকেট। এ সুযোগে ক্রিকেটাররা পেয়ে যায় লম্বা ছুটি। তাই মিরপুর একাডেমি মাঠ ও মূল মাঠ পেয়েছে নতুন প্রাণশক্তি। বিসিবির মাঠকর্মীদের নিয়মিত পরিচর্যার ফলে ফিরে এসেছে গাড় সবুজ রূপ।
করোনাকালে ক্রিকেটারদের অনুশীলনের রোডম্যাপ তৈরির দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগের উপর। প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, সোমবার তারা সরেজমিনে দেখেছেন ক্রিকেটারদের অনুশীলন ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি। স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘ফিটনেসের কাজ করার জন্য যেসব প্রস্তুত রাখা দরকার, সেটি আমরা করছি। আজ আমরা সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি। আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। সুনির্দিষ্ট তারিখ বলতে পারছি না, কেননা দুই-একদিন ওদিক সেদিক হতে পারে।’
দেবাশীষ আরও বলেন, ‘অনুশীলনে আগ্রহীদের সংখ্যা পেলে আমরা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে পারবো, একদিনে কয়জন কাজ করবে সেটি নির্ভর করছে প্রকৃত সংখ্যার উপর। কাজটা হবে শুধুমাত্র ফিটনেস নিয়ে। এজন্য যা যা প্রয়োজন সব ব্যবহার করতে পারবেন খেলোয়াড়রা।’
আপাতত ক্রিকেটাররা মিরপুরে করতে পারবেন ফিটনেস অনুৃশীলন। তবে তাদের স্কিল নিয়ে কাজের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুটা সময়। যদিও কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে ব্যাটিং-বোলিং শুরু করে দিয়েছেন। তবে সরকারি পর্যায় থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়া পর্যন্ত বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে ডাকবে না, সেটি পরিষ্কার। এ ব্যাপারে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা খেলোয়াড়দের এখনো ঘরে বসেই ফিটনেসের কাজ করতে বলছি। মাঠে নামতে অনুৎসাহিত করছি। করোনা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে আর সরকারের অনুমোদন পেলে ক্রিকেট ফিরবে।’
তিনি আরও, ‘আমরাও চাইছি যতদ্রুত সম্ভব ক্রিকেট শুরু হোক। বাস্তবতা হল, সে পরিস্থিতি এখনো আসেনি। যদি কোনো খেলোয়াড় ব্যক্তিগত উদ্যোগে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে চায়, তাহলে করতে পারবে। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
করোনার কারণে গত চার মাস দেশের ক্রিকেট বন্ধ থাকায় বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিলেন ক্রিকেটাররা। যা আরও তাদের বাড়িয়ে দিয়েছিল একের পর এক সিরিজ বাতিলের খবর। তবে মানসিকভাবে শক্ত ছিলেন তারা। আশায় ছিলেন দ্রুত অনুশীলনের সুযোগ পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ব্যাপারটি হয়তো টের পেয়েছিল বিসিবি। আর তাই সংস্থাটি করোনার মধ্যেই ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।