অবশেষে পুঁজিবাজারে আসছে রবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে পুঁজিবাজারে আসছে টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা। গতকাল রবির মূল মালিক কোম্পানি আজিয়াটা মালয়েশিয়া স্টক এক্সচেঞ্জে এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই আইপিও ও তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানিয়েছে আজিয়াটা। আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড রবির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে।

তথ্যমতে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৮ লাখ শেয়ার ছাড়বে রবি। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে প্রায় ৫২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা তুলবে দেশের দ্বিতীয় সেলফোন অপারেটর কোম্পানিটি। এর মধ্য দিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণের পুঁজি সংগ্রহ করবে রবি। এই আইপিও দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি রবির পরিচালক ও কর্মীদেরও কোম্পানির শেয়ার মালিক হওয়ার সুযোগ করে দেবে আজিয়াটা। এতে কোম্পানির ভাবমূর্তিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও আশা করছে কোম্পানিটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৬ সালে সরকারি নির্দেশনায় ৪০ কোটি টাকা বা তারও বেশি মূলধনি প্রাইভেট কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আসার জন্য ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ওই নির্দেশনা কার্যকর না হওয়ায় ২০১০ সালের ৫ মে ৫০ কোটি টাকার ওপরে পরিশোধিত মূলধন হলে সেই কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন)। এরপর ২০১৫ সালের ১১ জুন বহুজাতিক ও বিদেশি যৌথ মালিকানার কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে প্রণীত ফোরজি লাইসেন্স-সংক্রান্ত নীতিমালায় টেলিকম খাতের কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আসার শর্ত দেওয়া হলেও সেজন্য কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। ব্যবসায়িকভাবে লোকসানের কারণে তালিকাভুক্তির শর্ত পূরণ করতে না পেরে পুঁজিবাজারের বাইরে ছিল রবি।

এদিকে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেনের সঙ্গে রবির সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি দল সাক্ষাৎ করে। সে সময় বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্তির বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়ে কর রেয়াতের হার বাড়ানো ও নীতিগত সহায়তা চায় রবি। সে সময় আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের সঙ্গে চুক্তির কথাও জানায় বহুজাতিক কোম্পানিটি। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া ও মূলধনি বিনিয়োগের কারণে ২০১৬ সালে আগের চার বছরের মুনাফার ধারা থেকে ছিটকে পড়ে রবি। ওই বছর প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে সংস্থাটি। ২০১৭ সালেও প্রায় ২৮০ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে রবি। ২০১৮ সালে মূল ব্যবসায় লোকসান গুনলেও টাওয়ার কোম্পানির মালিকানার অংশ বিক্রির অর্থে প্রায় ২১৫ কোটি টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা দেখিয়েছে কোম্পিানিটি।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে টেলিকম মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের একে খান গ্রুপের যৌথ মালিকানায় ‘একটেল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালে মালিকানা বদলের পর ‘রবি’ নামে ব্যবসা শুরু করে কোম্পানিটি। একীভূতকরণের পর যৌথ মালিকানার এই সেলফোন অপারেটর সেবাদাতা কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে ৬৮ দশমিক সাত শতাংশ শেয়ারের মালিক মালয়েশিয়ান আজিয়াটা গ্রুপ। এর বাইরে ভারতী এয়ারটেল ২৫ শতাংশ ও জাপানের এনটিটি ডোকোমো এখন রবির ছয় দশমিক তিন শতাংশ শেয়ারের মালিক। আর বাংলাদেশে রবির সেবাগ্রহীতার সংখ্যা এখন প্রায় চার কোটি ৭৩ লাখ, যা দেশের মোট গ্রাহকসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ। মালয়েশিয়াভিত্তিক কোম্পানি আজিয়াটা রবির ৬৮ দশমিক সাত শতাংশ শেয়ারের মালিক।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০