অবশেষে সরিয়ে দেয়া হলো বরির ডিজিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বরি) মহাপরিচালক (ডিজি) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরকে অবশেষে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। গত রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে তাকে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শেখ শামছুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এ বদলির আদেশ দেয়া হয়।

একই দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত আরেক আদেশে বরির ডিজি হিসেবে মো. আজিজুল ইসলামকে পদায়ন করা হয়। তিনি বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত।

সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি কেন্দ্র করে ইনস্টিটিউটে চরম অস্থিরতা শুরু হয়। শুধু তা-ই নয়, এসব ঘটনা কেন্দ্র করে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে বরখাস্তও করেন তিনি। এ ছাড়া নিয়োগ জালিয়াতি, টাকার বিনিময়ে নিয়োগ, নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ নানা অভিযোগ ওঠে ডিজির বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এসব বিষয় নিয়ে গত ১২ মার্চ ‘সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ডিজির নিয়োগ সিন্ডিকেট!’ ও ১৭ এপ্রিল ‘বরি ডিজির বিরুদ্ধে নারী কর্মীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করে দৈনিক শেয়ার বিজ।

গত ২২ জানুয়ারি ডা. একিউএম জিসানুর রহমান ও ৭ মার্চ বরির তিন কর্মকর্তা পৃথকভাবে এসব অভিযোগ দাখিল করেন। দুদকে দাখিল হওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে বরিতে মেডিকেল অফিসার পদে আবেদন করেন চিকিৎসক মো. ওয়াহেদুজ্জামান। প্রবেশপত্রে তার রোল নম্বর ছিল ৮০১। পরে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে একটি উপজেলা হাসপাতালে যোগ দেন তিনি। এজন্য তিনি ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেননি। পরীক্ষা না দিয়েও তিন বছর পর ওই নিয়োগ পরীক্ষার ফলে নিজের রোল নম্বর দেখে বিস্মিত হন তিনি। কৌতূহলবশত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি নাকি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আবেদনই করেননি! ৮০১ রোল নম্বরে একজন নারী চিকিৎসক পরীক্ষায় বসে চাকরিও পেয়েছেন। ওয়াহেদুজ্জামান অনুপস্থিত থাকায় কৌশলে রাতারাতি ৮০১ রোল ওই নারী চিকিৎসককে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এতে আবেদন করা ও পরীক্ষা দেয়ার জন্য দুই বছর অপেক্ষা করা, এমনকি লিখিত

 পরীক্ষা দেয়ারও প্রয়োজন পড়েনি তার। গত ২ এপ্রিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর ডিজির বিরুদ্ধে নারী কর্মীকে মানসিক নির্যাতন করার একটি অভিযোগ জমা হয়। বরির বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফিক বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিপাসা সুর অভিযোগটি করেন। বিপাসা সুর এ ঘটনায় ডিজি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। পরে এসব ঘটনা ঘিরে তদন্ত শুরু করে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দেয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা। এর পরেই তাকে বদলির এ আদেশ দেয়া হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০