নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার আবাসিক প্লট থেকে সব অননুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে ১০ মাস সময় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
গত বছর দেওয়া এক রুলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল (বুধবার) এ রায় দেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রাজউকের অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে করা ২৩৭টি রিট আবেদন এক সঙ্গে নিষ্পত্তি করে এ রায় দেওয়া হলো।
রাজউকের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। অন্যদিকে আইনজীবী আহসানুল করীম, এবিএম আলতাফ হোসেন, ইদ্রিসুর রহমান, আসিফ আলী খান, মনিরুজ্জামান ও ফারজানা খান রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন।
রায়ের পর এবিএম আলতাফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আদালত গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার আবাসিক প্লট থেকে সব অননুমোদিত বাণিজ্যিক ও অবৈধ স্থাপনা ১০ মাসের মধ্যে সরিয়ে নিতে বলেছেন। এ ১০ মাসের মধ্যে ওইসব স্থাপনায় রাজউক বা কোনো সেবা সংস্থা কোনো ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারবে না। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। তবে ১০ মাসের মধ্যে মালিকরা অননুমোদিত বাণিজ্যিক ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নিলে রাজউক নোটিস ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারবে।’
রায়ের পর নিজের কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে হোটেল, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ব্যবসা চালাচ্ছিল কিছু প্রতিষ্ঠান। গত বছর হলি আর্টিজানে হামলার পর অননুমোদিত বাণিজ্যিক ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিস দিয়েছিল রাজউক। ওই নোটিস চ্যালেঞ্জ করে ২৩৭টি প্রতিষ্ঠান রিট আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ মামলাগুলোর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ১০ মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকরা যদি রাজউকের কাছে আবেদন করেন ও রাজউক যদি বিবেচনা করে, সেক্ষেত্রে তারা ব্যবসা করতে পারবেন। যেমন আবাসিক এলাকায় যদি কোনো হোটেল থাকে ও তারা যদি দরখাস্ত করে যে এটাকে তারা আবাসিক এলাকাতেই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালাতে চান, তাহলে নিয়মানুযায়ী কনভার্সন ফি দিয়ে তা করা যায়। তবে আবাসিক এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয় এরকম কিছু করা যাবে কি না, এটা বিচার্য হবে।’
এ সময় ‘টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্টের’ ৭৫ ধারা অনুযায়ী ‘কনভার্সন ফি’ দিয়ে ইতোমধ্যে গুলশান ও বনানীর কিছু আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।