নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি আরবে বসবাসকারীদের ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও যারা এখনও অবৈধভাবে বসবাস করছে, তাদের বিনা শাস্তিতে দেশে ফেরার জন্য আরও দেড় মাস সময় বাড়িয়েছে সৌদি সরকার।
সৌদির ডিরেক্টরেট জেনারেল অব পাসপোর্ট মেজর জেনারেল সুলাইমান বিন আবদুল আজিজ আল-ইয়াহইয়া জানান, ‘এ নেশন উইদাউট ভায়োলেটরস’ কর্মসূচির আওতায় এ সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা এখনও এ সুযোগ নেননি কিংবা আউট পাস ও এক্সিট ভিসা নেওয়ার পরও সৌদিতে আছেন, তাদের ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে সৌদি আরব ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সৌদি প্রেস এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন, অর্থাৎ ২৫ জুন থেকে এ সময় বৃদ্ধি কার্যকর হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসী সাধারণ ক্ষমার সুযোগে সৌদি আরব ত্যাগ করেছেন বলে দেশটির সংবাদ মাধ্যমের তথ্য।
এর আগে, বসবাসের অনুমতি (ইকামা) ছাড়াই অবস্থান, অনুমতি ছাড়া কাজ করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে গত ২৯ মার্চ থেকে তিন মাসের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলো সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আর সৌদি আরব বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, বৈধ কাগজপত্রহীন ১৯ হাজার ৮৩৩ বাংলাদেশি ইতোমধ্যে সাধারণ ক্ষমার সুযোগে দেশে ফিরেছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আউট পাস ও এক্সিট ভিসা সংগ্রহ করে দেশে ফেরত না গেলে এক লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা এবং দুই বছর কারাদণ্ড হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সৌদি অভিবাসন দফতর।
সৌদি আরবের নিয়ম অনুযায়ী কোনো অবৈধ অভিবাসী ধরা পড়লে তাকে জরিমানা বা শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তার আঙুলের ছাপ রেখে দেওয়া হয়, যাতে ওই ব্যক্তি ভবিষ্যতে আর সৌদি আরবে কাজের জন্য আসতে না পারেন।
সাধারণ ক্ষমার সুযোগ যারা নেবেন, তাদের কোনো শাস্তি ছাড়াই দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে। তাদের আঙুলের ছাপও নেওয়া হবে না। ফলে ভবিষ্যতে কাজ নিয়ে বৈধভাবে সৌদি আরবে আসার সুযোগ থাকবে তাদের।
দুই বছর আগে সৌদি সরকার ইকামা পরিবর্তনের যে সুযোগ দিয়েছিল সেখানে প্রায় ২৫ লাখ অবৈধ অভিবাসী ও অবৈধ শ্রমিক আগের ওই সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশিও ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এ ‘এ নেশন উইদাউট ভায়োলেটরস’ কর্মসূচি।
সৌদি গেজেটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৩ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন, যার মধ্যে ৬০ হাজার নারী কাজ করছেন গৃহকর্মী হিসেবে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার।