নিজস্ব প্রতিবেদক: অ্যাপভিত্তিক ‘ডিজিটাল মাইক্রোফাইন্যান্সের’ নামে অবৈধ সুদের কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই চীনের দুই নাগরিকসহ প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুদিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। এছাড়া আরও পাঁচজনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গতকাল শুক্রবার ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস এ আদেশ দেন। রিমান্ডে নেয়া সাত আসামি হলেনÑচীনা নাগরিক হি মিংশি ও ইয়াং সিকি, মজুমদার ফজলে গোফরান, আহসান কামাল, হিমেল অর রশিদ, নাজমুস সাকিব ও জেরিন তাসনিম বিনতে ইসলাম।
কারাগারে যাওয়া পাঁচ আসামি হলেন ইমানুয়েল অ্যাডওয়ার্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনুর আলম, শুভ গোমেজ ও আকরাম আলী।
আদালতে ধানমন্ডি থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক এশারত আলী এসব তথ্য জানান।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিটের উপপরিদর্শক (নি.) প্রাণকৃষ্ণ সরকার রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১২ আসামিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেন।
প্রথম সাতজনকে ১০ দিনের জন্য রিমান্ডে নিতে এবং পরের পাঁচজনকে এক দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাত আসামির দুই দিনের রিমান্ড এবং অপর পাঁচ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সরকারি অনুমোদন ছাড়া থান্ডার লাইট টেকনোলজি লিমিটেড, নিউ ভিশন ফিনটেক লিমিটেড ও বেসিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নামে এসব ব্যক্তি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।
তারা টিকালা, ক্যাশম্যান, র্যাপিড ক্যাশ, আমার ক্যাশের মাধ্যমে জামানতবিহীন ঋণ দেয়ার নামে অতিরিক্ত হারে সুদের কারবার করে বলে অভিযোগ করা হয়।
এসব অ্যাপের সার্ভার চীনে অবস্থিত এবং সেখানে থেকে পরিচালিত হয়Ñউল্লেখ করে মামলায় অভিযোগ করা হয়, কিছু চীনা নাগরিক বাংলাদেশি নাগরিকদের সহায়তার নামে এসব অ্যাপের মাধ্যমে জামানতবিহীন স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার প্রলোভনে গ্রাহক আকৃষ্ট করে।
তাদের বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে গ্রাহকরা ঋণ নিয়ে স্বল্প সুদের পরিবর্তে উচ্চহারে সুদ দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
এছাড়া আইনগত অনুমোদন ছাড়াই তারা গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে। গ্রাহকরা এসব অ্যাপ ইনস্টল করলে তাদের অজান্তে ক্যালেন্ডারের ইভেন্ট পড়া, গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মোবাইল ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারণ, মোবাইলের কন্টাক্ট পড়াসহ মোবাইলের এক্স্যাক্ট লাইভ লোকেশন নির্ণয় হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
পাশাপাশি ফোনের স্ট্যাটাস এবং তথ্য সংগ্রহ, ফোনে সংরক্ষিত মেসেজ পড়া, পরিবর্তন করার অনুমতি নিয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হুমকিতে পড়ে।
প্রতারণার শিকার একজনের অভিযোগ পেয়ে ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।