‘অব্যাহতির’ ঘোষণা আমলে নিচ্ছেন না চুন্নু

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু তাকে এবং দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে অব্যাহতি দেওয়ার যে ঘোষণা রওশন এরশাদ দিয়েছেন, তাকে আমলে না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ গতকাল রোববার নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণার পাশাপাশি জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহিত দেওয়ার কথা জানানোর পর দুপুরে বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসেন চুন্নু।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের এমন কর্মকাণ্ড নতুন কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এবারই প্রথম নয়, এটা  তৃতীয়বার। এর আগেও দুইবার তিনি এইরকম বাদ দিয়ে নিজেই চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। পরবর্তী সময় প্রত্যাহার করেছেন উনার ঘোষণা দেওয়া ঠিক না।

“কাজেই উনার এই ঘোষণা আমি মহাসচিব হিসেবে নলেজে নিচ্ছি না। এটার কোনো ভিত্তি নাই। এটা অগঠনতান্ত্রিক, এ ধরনের কোনো ক্ষমতা উনার নাই। এই বিষয়টা আইনের ভাষায় যেটা বলে আমরা এটা আমলে নিচ্ছি না।”

চুন্নু বলেন, “আমি একটা কথাই বলেছিÑএটার কোনো ভিত্তি নাই, তাই এ বিষয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নাই। তাই বিষয়টি আমরা আমলে নিচ্ছি না। বেগম রওশন এরশাদ আমাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের স্ত্রী। উনাকে শ্রদ্ধা করি, সেই শ্রদ্ধার কারণেই উনাকে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক করা হয়। প্রধান পৃষ্ঠপোষকের দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কোনো রকম ক্ষমতা নাই, কোনো রকম সুযোগ নাই। আলংকারিক পদ। কাজেই আলংকারিক পদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না।”

এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গুলশানে নিজের বাসায় দলের ‘ক্ষুব্ধ ও বঞ্চিত’ নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন রওশন এরশাদ।

সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মজিবুল হক চন্নুকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে নিজেই দলের হাল ধরার ঘোষণা দেন তিনি। আর কাজী মো. মামুনুর রশিদকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেন।

এবার নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশনের পুরনো বিবাদ নতুন করে প্রকাশ্যে আসে।

এরশাদের স্ত্রী রওশন অভিযোগ করেন, এরশাদের ভাই জিএম কাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সরিয়ে ‘ক্যু’ করে জাতীয় পার্টির কর্তৃত্ব নিয়েছেন।

রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত নেতাদেরও এবার লাঙ্গলের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এরশাদের ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ যে রংপুর-৩ আসনের এমপি ছিলেন, সেখানে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে ভোট করেন জিএম কাদের নিজে। শেষ পর্যন্ত রওশন বা সাদ আর নির্বাচনে আসেননি।

ভোটের পর ‘দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের’ কারণ দেখিয়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে জাতীয় পার্টি।

ভোটের পাঁচ দিনের মাথায় দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়কে দলের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তারা দুইজনই রওশন এরশাদপন্থি হিসেবে পরিচিত।

রওশন ঘনিষ্ঠ কাজী ফিরোজ রশীদ দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। আর সুনীল শুভরায় এরশাদের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি ছিলেন।

গতকাল রওশনের মতবিনিময় সভায় অ্যাবহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুল ইসলাম সেন্টু সুনীল শুভরায়, অব্যাহতিপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান জাঙ্গীর আলম পাঠান, ইয়াহিয়া চৌধুরী, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সারোয়ার মিলন, অধ্যাপক দেলায়ার হোসেন খান, রফিুকুল হক হাফিজও ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০