অভিবাসননীতি সংস্কারে ট্রাম্পের রূপরেখা

শেয়ার বিজ ডেস্ক : প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ‘অভিবাসন সংস্কার’-এর বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  ‘ড্রিমার কর্মসূচি’র আওতাধীন ও আওতাভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা ১৮ লাখ অভিবাসীকে ক্রমান্বয়ে শর্তযুক্ত নাগরিকতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি। বাতিল করতে চেয়েছেন পারিবারিক সূত্রে অভিবাসন (চেইন মাইগ্রেশন)। সীমিত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন লটারিভিত্তিক অভিবাসন পদ্ধতি। সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘কঠোর অভিবাসন নীতি’ আখ্যা দিয়েছে। খবর সিএনবিসি।

গত মঙ্গলবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দেন ট্রাম্প। আগের প্রেসিডেন্টদের মতো গতানুগতিক ভাষণই দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে তার ভাষণের একটি দিক ছিল স্বতন্ত্র। একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে বারবার ফিরেছেন তিনি। তা হলো অভিবাসন সংস্কার নীতি।

প্রায় ৮০ মিনিটের বক্তব্যের বেশিরভাগটাই এ ইস্যুতে ব্যয় করেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে প্রায় ৬৫০ শব্দ উচ্চারণ করেছেন তিনি। চার স্তম্ভে উপস্থাপিত তার অভিবাসন পরিকল্পনায় ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘সব ধরনের পারিবারিক ইতিহাস, বর্ণ ও ধর্ম বিশ্বাসসম্পন্ন আমাদের সব নাগরিকের সুরক্ষায় একসঙ্গে কাজ করতে আজ রাতে আমি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই দলের প্রতিই আমন্ত্রণের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি।’

তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তার ভাষণকে উদ্ধৃত করে বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটির বেশি অবৈধ অভিবাসী থাকলেও ১৮ লাখ ড্রিমার অভিবাসী ও ড্রিমারের জন্য আবেদনকারীকে সুরক্ষার প্রস্তাবই পুনরুচ্চারণ করেছেন ট্রাম্প। সেখানেও আবার ভিসা লটারি ও চেইন মাইগ্রেশন বন্ধের প্রস্তাবের পাশাপাশি মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে ২৫ বিলিয়ন ডলার তহবিল বরাদ্দের শর্ত আরোপ করেছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় থেকেই অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তোলার কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার বিরোধী। এ ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের দীর্ঘদিন ধরে টানাপড়েন চলছে। ২০১৫ সালের এক হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী এক কোটি ১০ লাখ। ট্রাম্পের অভিবাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৮ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে মার্কিন নাগরিকত্ব দানে ১০ থেকে ১২ বছরের একটি রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। ওই অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছে প্রায় সাত লাখ ‘ড্রিমার’, যারা ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছিল। তারা সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলের ডেফারড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাভাইলস (ডাকা) কর্মসূচির অধীনে প্রত্যাবাসন থেকে রেহাই পেয়ে আসছে। বাকি ১১২ লাখ ‘ডাকা’র জন্য আবেদন করেনি, কিন্তু এর আওতাভুক্ত হওয়ার যোগ্য এমন অভিবাসী।

প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচলিত দুটি অভিবাসন পদ্ধতি বাতিলও করতে চাইছেন। এর একটি হচ্ছে, চেইন ইমিগ্রেশন, যার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়া একজন অভিবাসী তার পরিবারের সব সদস্যকে (মা, বাবা, ভাই, বোন ও তাদের পরিবারের সদস্য) নিজের কাছে নিতে পারেন এবং তারা মার্কিন নাগরিকত্ব পান। ট্রাম্প এই পদ্ধতির ঘোরবিরোধী। তার নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, একজন নাগরিকত্ব পাওয়া অভিবাসী শুধু তার স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের যুক্তরাষ্ট্রে নিতে পারবে। এছাড়া ট্রাম্প ডিভি লটারি পদ্ধতিটিও বাতিল করতে চান। বর্তমানে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে এ লটারির মাধ্যমে ৫০ হাজার মানুষ গ্রিন কার্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০