প্রতিনিধি, রাজশাহী: রাজশাহীর মোহনপুরে সরকারী জায়গায় নির্মানাধীন অর্ধশতাধিক অবৈধ দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার (২৫ জুলাই) সকালে উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়নের কামারপাড়া বাজারে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অভিযানে এসব দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়। তবে উচ্ছেদ অভিযান শেষ হতেই সেখানে ইউপি কার্যালয় করার ঘোষণা দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কামারপাড়া বাজারে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে অবৈধ দোকান থাকায় তীব্র যানজট তৈরি হত বিভিন্ন সময়। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাও ঘটে কয়েকবার। সেজন্য অভিযান চালিয়ে অর্ধশত টিনের ও আধাপাকা দোকান উচ্ছেদ করেন জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কামরুল ইসলাম। অভিযান শেষে তিনি ঘটনাস্থল ছেড়ে যেতেই সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাজির হন। এ সময় ‘রায়ঘাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রধান কার্যালয়’ লেখা সম্বলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দেন তারা।
স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, মোহনপুর ও কেশরহাট বাজারে সড়কের দুপাশে সরকারী জায়গায় অবৈধ অনেক দোকান থাকলেও রহস্যজনক কারণে এদিন উচ্ছেদ করা হয়নি। দীর্ঘদিন পূর্বে মোহনপুর বাজারে উচ্ছেদে কয়েকটি দোকান ভেঙে ফেলা হলেও পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে আবারো দোকান বসেছে একই জায়গায়।
সূত্রটির দাবি, কেশরহাট বাজারের দোকানগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আয়েন উদ্দিন। তার সঙ্গে রয়েছেন কেশরহাট পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান শহিদ। আর মোহনপুর বাজারের দোকান নিয়ন্ত্রণ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলার আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সালাম। সরকারী জায়গা দখলে পেতে দোকানপ্রতি এককালীন ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা করে দিতে হয় এ তিন জনপ্রতিনিধিকে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুরঞ্জিত সরকার বলেন, দোকানঘরের নামে জায়গা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমপি আয়েন ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। জায়গা দখল নিতে কয়েকবার মারামারিও হয়েছে। অথচ মোহনপুর কেশরহাট বাজার রেখে এসে কামারপাড়ায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে রায়ঘাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান মিঠু বলেন, আমি কোনো ব্যানার টাঙাইনি। স্থানীয় কয়েকজন ছেলেপেলে সেখানে আড্ডা দেয়ার জন্য জায়গাটি ফাঁকা পেয়ে ব্যানার টাঙিয়েছে।
জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ উপবিভাগ-২ রাজশাহীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ্ মো. আসিফ বলেন, অবৈধ দোকান থাকায় যানজট সৃষ্টি হত কামারপাড়া বাজারে। সড়ক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সেজন্য অভিযান চালানো হয়েছে। তবে সেখানে ছাত্রলীগের ব্যনার ঝুলানোর এখতিয়ার কারো নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনে আবারো অভিযান চালানো হবে।