প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ‘মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের ক্ষেত্রে কোনো কমপ্লেইন এলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেমন জামালপুরের জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়ার পর তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। হুট করেই মাঠ প্রশাসনে আপাতত রদবদল হবে না। কারণ জেলার সব পথ, কেন্দ্র, জায়গা, পরিবেশ সবকিছুই প্রশাসনের জানা থাকে। তাই সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তদন্তে সত্যতা মিললেই রদবদল বা আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কুষ্টিয়া, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সভায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসানসহ অন্যান্য জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিজিবি কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সেক্টরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি আহসান হাবিব খান বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন হবে ব্যালটে। তবে ইভিএমের মতো স্বচ্ছতা থাকবে না ব্যালটে। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রার্থীর এজেন্টরা স্বচ্ছতা নিশ্চিতেও কাজ করবেন। তারা দেখবেন যেন একজন অন্য জনের ভোট না দিতে পারে।
তিনি বলেন, ইভিএম ছিল স্বচ্ছতার প্রতীক, এতে আমার আস্থা আছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দলের সদস্যরা বলে এটা জাদুর বাক্স, তারা এটাকে চায়নি। অথচ সেখানে সিসি ক্যামেরা ছিল, পর্যবেক্ষণ করতাম আর ভোটার বোতাম টিপে তার পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে পারত। তবে এখানেও কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচন নির্বাচনের মতোই হবে।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়াল আছে, সেখানে আচরণ বিধিসহ সব বিষয় লিপিবদ্ধ আছে। এটাকে শতভাগ পালন করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাই একমাত্র অধিনায়ক। তিনিই সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবেন। আমাদের আইনগুলো পরিবর্তন করেছি। অনেক টকশোতে মিষ্টি কথা আসে যে, আমাদের পায়ে আমরা কুড়াল মেরেছি। প্রতিটা আইনের মাধ্যমে জেল-জরিমানার বিধান রেখে আপনাদের সুরক্ষা করেছি। একটা নীতিমালা করেছি, যাতে করে গণমাধ্যমকর্মীরা ভেতরে যেতে পারবেন, ছবি তুলবেন এবং বাইরে লাইভ করবেন।
তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে এই সভায় বলে গেলাম কোনো ছাড় নেই অনিয়ম হলে। কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার কোনো অসংগতি দেখলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেবে। এতেও নিয়ন্ত্রণ না হলে ওই কেন্দ্রে ভোট বন্ধ থাকবে। সেখানে পরে আবার ভোট নেয়া হবে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, পরিষ্কার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন লোকাল প্রশাসন বিবেচনা করে মোটরসাইকেলের অনুমতি দেবে। কারণ আগের তুলনায় এখন মোটরসাইকেল বেড়েছে, আর তার মাধ্যমেই কালোটাকা দেখা যায়। আর তাদের মাধ্যমেই নির্বাচনে অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই খুব সীমিত আকারে যারা ব্যবহার করবেন, তাদের সব বৈধ কাগজ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন আইনে বাসা থেকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সময় যদি কোনো ভোটার বাধাগ্রস্ত হন, তাহলে দোষীকে তিন থেকে পাঁচ বছর জেল দেয়া হবে অপরাধ বিবেচনা করে। যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে কেন্দ্রে থাকবেন, তারা এ আইনের প্রয়োগ করবে।
ইসি আহসান হাবিব জানান, নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও বসব।