Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 2:50 pm

অমিত-তোহা পাঁচ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা ও এজাহারভুক্ত আসামি হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। অন্যদিকে ওই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আরেক আসামি মাজেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
সূত্র জানায়, ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সারাফুজ্জামান আনসারী গতকাল আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা ও এজাহারভুক্ত আসামি হোসেন মোহাম্মদ তোহার জামিন নাকচ করে রিমান্ডে পাঠানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার সবুজবাগ এলাকা থেকে অমিত সাহা ও গাজীপুরের মাওনা থেকে তোহাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
আলোচিত দুই ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা ও এজাহারভুক্ত আসামি হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে গতকাল (শুক্রবার) শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ। অন্যদিকে দুই বুয়েট ছাত্রের পক্ষে রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী মো. আইয়ুব হোসাইন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নাকচ করে দুই আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র অমিত বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন হিসেবে তার নাম আসার পরও মামলায় তার নাম না থাকা নিয়ে গত দু’দিন ধরেই নানা আলোচনা চলছিল। আর যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তোহা এ হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র তোহাও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত।
এদিকে গতকাল ভোর ৪টায় সিলেট থেকে মামলার আরেক অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী মাজেদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুয়েটের ম্যাটারিয়াল অ্যান্ড ম্যাটার্লজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজেদুল ইসলাম শেরেবাংলা হল ছাত্রলীগের একজন কর্মী। আবরার হত্যা মামলার এজাহারে তার নাম রয়েছে আট নম্বরে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আবরার হত্যা মামলায় এ নিয়ে মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো। তাদের মধ্যে ১৩ জন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলার এজাহারে নাম না থাকলেও হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় বাকি চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। আবরারের বাবার করা মামলায় ১৯ জনের নাম এসেছে। তাদের মধ্যে ছয়জন এখনও পলাতক, যাদের গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার বুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ গত বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি বুয়েটের বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আবরারকে কীভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটানো হয়, তার ভয়ংকর বিবরণ তিনি জবানবন্দিতে দিয়েছেন বলেও সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।