এ কে সাজু, নওগাঁ: অরগানিক পদ্ধতিতে ইতালিয়ান জাতের চেরি টমেটো চাষ করে তাক লাগিয়েছেন নওগাঁর উদ্যোক্তা মাসুদ রানা। দেখতে সুন্দর, সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি এ জাতের টমেটোর ফলনও হয়েছে দ্বিগুণ। তার এ চাষ পদ্ধতি ও ফলন দেখে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। এ জেলায় এখনও বাজার তৈরি না হওয়ায় কিছুটা বিপাকে এ উদ্যোক্তা। তবে এ টমেটোর বাজার তৈরি করতে কাজ করছেন কৃষি বিভাগ।
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বেদগাড়ি গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা। ইউটিউবে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে শুরু করেন চেরি টমেটো চাষ। পরীক্ষামূলকভাবে ১০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন ম্যাগলিয়া রোসা জাতের চেরি টমেটো। এটিই এ জেলায় প্রথম বারের মতো চেরি টমেটো চাষ। তিনি বীজ সংগ্রহ করেন লাল তীরসিট কোম্পানি থেকে। বীজ বোপন করে ট্রেতে চারা তৈরি করেন। পরে তা মালচিং পদ্ধতিতে ব্রেড তৈরি করে সেখানে রোপণ করা হয়।
চারা রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে এর ফলন আসতে শুরু করে। এখন তার ক্ষেতে গাছ ভর্তি থোকায় থোকায় ঝুলছে চেরি টমেটো। কাঁচা সবুজ ও পাকা অবস্থায় গারো লাল ও কমলা রঙের এ টমেটো আঙ্গুরের চেয়ে কিছুটা বড়। এটি শীতপ্রধান দেশের ফসল হলেও এ দেশের আবহাওয়াতেও ফলন হয়েছে আশানুরূপ। প্রতিটি গাছে সাত থেকে আট কেজি টমেটো সংগ্রহ করা যাবে বলে মনে করছেন এ উদ্যোক্তা।

অরগানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে এর উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি। দেশের বড় বড় শহরগুলোতে এর দাম ও চাহিদা রয়েছে বেশ। কিন্তু এখনো এ অঞ্চলে এ টমেটোর বাজার তৈরি না হওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেনে এই উদ্যোক্তা।
চেরি টমেটো চাষি উদ্যোক্তা মাসুদ রানা জানান, আমি ইউটিউবে চেরি টমেটো চাষ পদ্ধতি, এর গুণগত মান, চাহিদা ও দাম সম্পর্কে জেনে উদ্বুদ্ধ হয়। এবং পরীক্ষামূলকভাবে ১০ শতাংশ জমিতে অরগানিক পদ্ধতিতে এ টমেটো চাষ করি। ফলনও হয়েছে আমার আশানুরূপ। কিন্তু এ টমেটো আমাদের জেলায় কেউ চেনেই না। এমনকি কেনার কেউ আগ্রহও দেখায় না। এ টমেটো চাষে আমি সফল হলেও এটি বিক্রি নিয়ে আমি চিন্তায় রয়েছি।
স্থানীয় কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, এর আগে চেরি টমেটো আমি দেখিনি। মাসুদ রানার বাগানে এসে এ ফল দেখে মন ভরে যায়। এত সুন্দর ফলগুলো গাছে ঝুলছে, যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। তাই আমরা চেরি টমেটো চাষ পদ্ধতি জানতে মাসুদ রানার ফসলের ক্ষেতে আসি। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে আগামীতে আমরাও চাষ করতে চান এ টমেটো।
রাণীনগর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাবিব রতন জানান, নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে কৃষি বিভাগ সর্বদা কাজ করছেন। কেউ চেরি টমেটোসহ যেকোনো ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ হলে আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করব।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শহীদুল ইসলাম, এ টমেটো উচ্চ ফলনশীল ও উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এ জেলায় এটিই প্রথম চাষ হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর পরিচিতি ও দাম দুটোই কম। তবে এর বাজার তৈরি করতে কৃষি বিভাগ কাজ করছেন বলে জানালেন এ কর্মকর্তা।