অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন সুশাসন প্রতিষ্ঠা

দেশের অর্থনীতি ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দেশের জন্য আরও ভালো হবে। তাই দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। বিশেষ করে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার, বিমা খাতসহ আরও যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, সেগুলোতে। কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যদি সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি বন্ধ না করা যায়, সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা যাবে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমেদ আল কবির এবং সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপারসন এমএস সেকিল চৌধুরী।
ড. আহমেদ আল কবির বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনীতি বিবেচনায় সবগুলো সূচক ইতিবাচক ও অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। অতীতে দেখা গেছে, নির্বাচন সামনে এলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো; কিন্তু এখন সেই অরাজকতার বিষয়গুলো নেই। বিশেষ করে হরতাল, ভাংচুর। বর্তমানে নির্বাচনের আগে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে এবং এটি দেশের জন্য শুভ লক্ষণ। এ অবস্থা যদি বজায় থাকে, তাহলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনে কোনো বড় ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি হবে না মনে করি। এরকম পরিবেশ যদি সব সময় বজায় থাকে, সেক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে।
নির্বাচনের পর যে সরকারই আসুক না কেন, গত ১০ বছরে অর্থনীতিতে উন্নয়নের যে ধারা বজায় রয়েছে, কেউ চাইবে না সেখান থেকে পিছিয়ে যেতে। অর্থাৎ নতুন সরকার এলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে একজন নতুন ব্যক্তি আসবেন। অর্থনীতিতে এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে হয়তো মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে না; তবে মেজর বিষয়গুলো দ্রুত পরিবর্তন হবে মনে করি। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে; কারণ এখন অর্থনীতি একটি ভালো অবস্থানে আছে। সরকার প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য যে বিষয়গুলো হাতে নিয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া যেন চলমান থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে। কয়েক বছরে দেশের আর্থিক খাতের সব মৌলিক বিষয়ের পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে ডিজিটাইজেশন। আগে ব্যাংক খাতে লেজারের মাধ্যমে হিসাব রাখা হতো, তখন ম্যানেজাররা হিসাব-নিকাশে লুকোচুরির সুযোগ পেত; কিন্তু এখন ডিজিটাইজেশন হওয়ার কারণে কোনো তথ্য লুকিয়ে রাখার সুযোগ নেই।
হ্যাঁ, তবে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। আর এটি কমাতে হলে আরও মৌলিক কিছু বিষয়ে পরিবর্তন করতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে এর জন্য একটি বিশেষ আদালত গঠন করতে হবে।
এমএস সেকিল চৌধুরী বলেন, দেশের অর্থনীতির যে গ্রোথ, তাতে অর্থনীতি ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যে পরিকল্পনা রয়েছে, এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দেশের জন্য আরও ভালো হবে। তাই দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। বিশেষ করে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্যাপিটাল মার্কেট, বিমা খাতসহ আরও যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, সেগুলোতে। কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যদি সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি বন্ধ না করা যায়, সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা যাবে না। আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে, দেশের প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ লোক বিদেশে বসবাস করে এবং প্রতি বছর প্রায় ১৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার দেশে পাঠায়। অথচ তারা বিদেশে বিভিন্নভাবে হয়রানি হচ্ছে কিন্তু তাদের সেভাবে সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছে না সরকার। এখন সময় এসেছে এদের দিকে নজর দেওয়ার। কারণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা বিশাল ভূমিকা রাখে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০