Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 9:01 pm

অর্থনীতির আকারের সঙ্গে বাজারের লেনদেন সংগতিপূর্ণ নয়

দেশের অর্থনৈতিক সব সূচক ইতিবাচক আর বাজারের অবস্থা অন্যরকম এটি মোটেই কাম্য নয়। এ সমস্যা উত্তরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর বাজার শুধু ইক্যুইটি-নির্ভর। বাজার সম্প্রসারিত করতে হলে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে হবে। বিশেষ করে ডেরিভেটিফ, বন্ড ও ভালো মানের মিউচুয়াল ফান্ড। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব ও কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এমএম মাসুম।
হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, বাজারের অবস্থা খুবই নাজুক। অবশ্য এর বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বড় কারণ হলো বাজারের দায়িত্বশীলরা সংশ্লিষ্ট জায়গা থেকে সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। আরেকটি কারণ হচ্ছে স্পনসররা কোনো ঘোষণা ছাড়াই নামে-বেনামে প্রচুর শেয়ার বিক্রি করেছেন; আবার কেউ ঘোষণা দিয়েও প্রচুর শেয়ার বিক্রি করেছেন এবং ব্যাংক খাত নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথাবার্তা বলেছেন। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আর এ প্রভাব বাজারে পড়েছে। কয়েক দিন ধরে প্লেসমেন্ট শেয়ার ও আইপিও বন্ধ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আসলে এ বিষয়গুলো বন্ধ করলে বাজার ভালো হবে না বলে মনে করি। বাজার সত্যিকারভাবে ভালো করতে হলে ভালো কোম্পানি আনতে হবে। দেশে সরকারি, বেসরকারি ও বহুজাতিক অনেক ভালো কোম্পানি রয়েছে। অর্থাৎ বাজারে বছরে অন্তত ওইসব কোম্পানি দুই থেকে তিনটি আনা যায়, সেক্ষেত্রে বিদেশি ও নতুন অনেক বিনিয়োগকারী আসতে আগ্রহী হবেন।
তিনি আরও বলেন, বাজার ইক্যুইটি-নির্ভর। বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হলে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনতে হবে। বিশেষ করে ডেরিভেটিফ, বন্ড ও ভালো মানের মিউচুয়াল ফান্ড। দেশের অধিকাংশ কোম্পানি গড়ে উঠেছে ব্যাংকনির্ভর। এটি হওয়া উচিত ছিল ইক্যুইটিনির্ভর। ব্যাংককে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ, ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি আর পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদির জায়গা। কিন্তু ব্যাংক স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ঋণই দেয়।
ব্যারিস্টার এমএম মাসুম বলেন, এখন বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীরা হতাশাগ্রস্ত। অবশ্য বাজার এরকম হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে। একটি হচ্ছে তারল্য সংকট; অপরটি বাজার সম্পর্কে বিনিয়োগকারীর আস্থার অভাব। কথা হচ্ছে, দেশের অর্থনৈতিক সব সূচক ইতিবাচক আর সেখানে বাজারের এরকম অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। এ অবস্থা থেকে বাজারের উত্তরণ করতে হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কারণ, বর্তমান বাজার ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার নয়।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ