Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 2:19 pm

অর্থনীতি সচল রাখতে স্বল্প ও দীর্ঘ পরিকল্পনা করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক সচলতা, পুনরুদ্ধার, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ, এফডিআই ও ওএফডিআইয়ের বিষয়ে এক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গত রোববার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আইকনে ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, করোনা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। এ পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য আমাদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে।

এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মারসি মিয়াং টেম্বন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এ কে আজাদ, আবদুল মাতলুব আহমেদ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, সালেহ উদ্দিন আহমেদ, এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, আইডিবি’র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাসিম বিন সুলাইমান, আইএমএফের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট মুহাম্মদ ইমাম হুসাইন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের স্বাস্থ্য খাতকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী করতে হবে। কারণ মানবশক্তি ছাড়া কোনোভাবেই অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা যাবে না। সেজন্য টেলিমেডিসিন সেবাকে আরও বেশি সক্রিয় করতে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্য খাতের মধ্যে আইটি ব্যবস্থাকেও একত্রিত করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বর্তমান সময়ে আমরা অনেকটাই সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই মহামারির সময়ে ব্যবাসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা, রেডিমেড গার্মেন্ট নিয়ে বিভিন্ন দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন দেশের সব ধরনের ব্যবসায়ীরা। এসব বিষয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আমরা ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক চাকা সচল করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এছাড়া আসন্ন বাজেটেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, দেশের এ মহামারির সময়ে অর্থনৈতিক চাকা সচল রেখে দেশের স্বাস্থ্য খাত ও শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এমন সময়েও আমাদের অনেক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরও আমাদের অর্থনৈতিক দিক ঠিক রয়েছে। তবে করোনা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। এই পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য আমাদের স্বল্প ও দীর্ঘ পরিকল্পনা করতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, দেশের কৃষি খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের রপ্তানি খাতকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলতে পারি এবং সেইসঙ্গে বিদেশি বিনিয়োাগকারীদেরও আকৃষ্ট করা সম্ভব।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষিপণ্য উৎপাদনের দিক দিয়ে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। মহামারির সময়ে দেশে যাতে খাদ্যের সংকট না হয়, সেজন্য করোনা আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কৃষকরা প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য উদ্বৃত্ত উৎপাদন করে আসছে। এছাড়া জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রপ্তানির খাতের দিকেও নজর দিতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মারসি মিয়াং টেম্বন বলেন, ‘সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের সুবিধার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজটি সঠিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং দেশের বাণিজ্য খাতটিকেও উম্মুক্ত রাখা জরুরি। এই সময়ে আমাদের বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কও বাড়ানো দরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালাউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজটি দেশের ব্যাংকিং খাতের ওপর নির্ভরশীল, যার কারণে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে ব্যাংক খাতের ফাঁকফোকরের দিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বর্তমান সময়ে দেশের সব স্তরের মানুষ দৃষ্টান্তমূলক একটি মানবতা দেখিয়েছে। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই একটি উপদেষ্টা কাঠামো প্রণয়নের কাজ করছে।