Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:07 am

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় আস্থাহীনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতন ও লেনদেন কমার মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহ পার করেছে। এতে পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। গত সপ্তাহে সূচকের সঙ্গে লেনদেন কমেছে ৫৫ শতাংশ। এ সময়ে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। বর্তমানে সামষ্টিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে পুঁজিবাজারের প্রতি সংশ্লিষ্টদের আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক হয়ে হাইপড-আপ বিমা এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট খাতের শেয়ার থেকে তাদের মুনাফা তুলে নিতে বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে গত সপ্তাহে পতন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে কেনা-বেচা উভয় দিকে সক্রিয় ছিল, তাই সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসগুলোয় সূচক বেড়েছে বলে জানান তারা।

আলোচ্য সপ্তাহে পাট খাতে শেয়ার কেনার চাপ ও আগ্রহ বেশি ছিল বিনিয়োগকারীদের। ফলে খাতটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে। এদিকে বিক্রির চাপ থাকায় সপ্তাহটিতে দর কমার শীর্ষে রয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ার।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে মোট ৩৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৭টির, কমেছে ১১৪টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৫টির দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ৯২টির, কমেছিল ৭৩টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ২১৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৫ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ৫ পয়েন্ট ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫ পয়েন্ট কমেছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮১৪ কোটি ৩৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল চার হাজার চার কোটি ৮১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অর্থাৎ দুই হাজার ১৯০ কোটি ৪৮ লাখ পাঁচ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন কমেছে, শতাংশের হিসাবে যা ৫৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নড়বড়ে আস্থার কারণে স্বল্প সময়ে মুনাফা তুলে নিতে বিনিয়োগকারীর বিক্রির চাপে গত সপ্তাহে পতন হয়েছে। ক্রমবর্ধমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীরা সতর্ক অবস্থানে থাকছেন। তাই মুনাফায় থাকা বিমা ও অন্য খাতের শেয়ারগুলোর বিক্রির চাপ ছিল আলোচ্য সপ্তাহে। এরপরও বিনিয়োগকারীরা কেনা ও বেচা উভয় দিকেই সক্রিয় থাকায় সপ্তাহের শেষে কার্যদিবসগুলোয় সূচক কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ সংশোধনের পর শেয়ার থেকে স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছেন বলে জানান তারা।

এদিকে গত সপ্তাহে কেনার চাপ সবচেয়ে বেশি থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে বিক্রির চাপ সবচেয়ে বেশি থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমে দ্বিতীয় স্থানে ছিল সাধারণ বিমা খাত। তৃতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতের শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৬০ শতাংশ।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সাধারণ বিমা খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৯ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল আইটি খাত।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮৪ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে লেনদেন হয়েছে ৮৫ কোটি ৬৯ লাখ ২২ হাজার ৮৮০ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৭টির, কমেছে ১০৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।