Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:26 pm

অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির জন্য নিরাপদ নৌপথ জরুরি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমাদের অনেক ইচ্ছা ছিল মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা পারিনি। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক পাঁচ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণে নৌপরিবহনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের এ অর্জনকে সুসংহত ও টেকসই করতে হবে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের শপথ, নিরাপদ রবে নৌপথ’। এটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী।

গতকাল বুধবার ‘নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তার বক্তব্য দেন ও নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহের উদ্বোধন করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগের চেয়ে বর্তমানে নৌ-দুর্ঘটনা অনেক কমে এসেছে। অন্য পরিবহনের তুলনায় নৌপথ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। দুর্ঘটনামুক্ত নদীপথ গড়ে তোলা নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান দায়িত্ব। আর আমাদের নৌ-দুর্ঘটনা কমে আসার কারণ হচ্ছে নৌযানের ডিজাইন, নৌপথ নিরাপদ করার জন্য যা করণীয়, তা করা হচ্ছে। আপনাদের যথেষ্ট তৎপরতা আছে বলেই আমার মনে হয় এগুলো কমেছে। প্রতি বছর যখনই কোনো ছুটি আসে, তখন আমরা দেখতাম একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটত। সেগুলো একদম চলে গেছে বলব না, তবে কমে এসেছে। সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে নৌ-খাত দুর্বার গতিতে এগিয়ে  চলছে। যেভাবে আমরা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছি, সেভাবে নৌ-খাতও এগিয়ে চলছে।’

নৌ-খাতের আরও উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কালবৈশাখী ঝড়ের সময়ে নদীপথে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যাত্রী সাধারণকেও সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে।’ সর্বশেষ নৌ-দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে। নৌপথ দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে রয়েছে। নৌপথের সংরক্ষণ কেবল সৌন্দর্য নয়, দেশের অর্থনীতির বিকাশেও ভূমিকা রাখে।’

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর এজেডএম জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আগের চেয়ে নৌপথ এখন অনেক বেশি নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, বিশেষ করে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা, বিআইডব্লিউটিএ, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ এবং জনসাধারণের সচেতনতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে যাত্রীবাহী নৌযানের দুর্ঘটনা অনেক কমে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার নৌ সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে নৌপথের সংরক্ষণ ও নৌপরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের সব নদীকে দখলমুক্ত করা এবং নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এর পাশাপাশি নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবেও সোচ্চার ও কঠোর হতে হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেছে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। দেশের ভাবমূর্তি ও উন্নয়ন সমুজ্জ্বল রাখার জন্য নিরাপদ এবং দুর্ঘটনামুক্ত নৌ-চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়াসে আমরা সবাই যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাব।’