নিজস্ব প্রতিবেদক: রফতানি আয়ে নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। অর্থবছরের শেষদিকে এসেও রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরের গত ১১ মাসে মোট রফতানি আয় হয়েছে তিন হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে চার শতাংশ কম। সর্বশেষ গত মাসে (মে ২০১৭) মোট রফতানি আয় হয়েছে প্রায় ৩০৭ কোটি ডলার, যা মাসওয়ারি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে আট শতাংশ পিছিয়ে। এদিকে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও সার্বিকভাবে রফতানি আয় গত বছরের এ সময়ের তুলনায় সাড়ে তিন শতাংশের মতো বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মাসিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ইপিবি’র হিসাবমতে, রফতানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে চলতি জুনে রফতানি আয় হতে হবে পাঁচ হাজার ২১০ কোটি ডলার। যদিও চলতি বছরের কোনো মাসেই চার হাজার ডলারের বেশি রফতানি আয় হয়নি। ফলে অর্থবছর শেষে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বরাবরের মতো রফতানির সিংহভাগ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। পোশাক খাতে অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে সময়ে) রফতানি আয় হয়েছে দুই হাজার ৫৬২ কোটি ডলার, যা গত বছরের এ সময়ের তুলনায় দুই দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি। তবে এ খাতের রফতানিও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় সাড়ে ছয় শতাংশ পিছিয়ে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই পোশাক খাতের রফতানির প্রবৃদ্ধি কমতে শুরু করে। এ বছর সর্বশেষ প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক ১৬ শতাংশ হলেও গত বছর তা ছিল প্রায় ১৩ শতাংশ। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা হ্রাস ও টাকার বিনিময় মান বৃদ্ধির কারণে রফতানির এ নি¤œমুখী ধারা সৃষ্টি হয়েছে বলে খাত-সংশ্লিষ্টরা বলে আসছেন। উল্লেখ্য, চলতি মাসের হিসাব অনুযায়ী দেশের মোট রফতানির ৮০ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে।
এছাড়া কৃষি ও শিল্প খাতের পাশাপাশি সেবা খাতের রফতানি থেকে সামান্য আয় হয়েছে। সেবা খাতের মধ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কেবল কম্পিউটার সার্ভিসের রফতানির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ খাতে অর্থবছরে মোট ১৭ কোটি ডলার রফতানি হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। এ খাতের রফতানিতে গত বছরের চেয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ।
রফতানির গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য খাতের মধ্যে কৃষিপণ্যের রফতানি হয়েছে ৯৯ কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে চার শতাংশ কম এবং গত বছরের এ সময়ের চেয়ে প্রায় তিন শতাংশ কম। শিল্প খাতের মধ্যে রাসায়নিক উপাদান, প্লাস্টিকপণ্য, রাবার, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, প্রকৌশল পণ্যের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৌশল খাতে ৬৬ কোটি ডলার, পাট ও পাটজাত দ্রব্যের ৯০ কোটি ডলার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ১১২ কোটি ডলার রফতানি আয় হয়েছে। চামড়া খাতের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত করা চামড়ার রফতানি গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কম হয়েছে। যদিও ফুটওয়্যারসহ অন্যান্য চামড়াজাত পণ্যের রফতানির বৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে খাতের রফতানি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হয়েছে।
Add Comment