অর্থবছর ২০১৭-১৮: কৃষিঋণ বিতরণ লক্ষ্য ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা  

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বার্ষিক নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এ নীতিমালা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এবারের নীতিমালায় কৃষি খাতের অগ্রযাত্রায় যেসব সবজি ও ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবিত হয়েছে, সেগুলোর উৎপাদনে ব্যাংকঋণ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো কাসাভা, ব্রোকলি ও স্কোয়াশকে ফসলভিত্তিক ঋণ দেওয়ার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়, চলতি অর্থবছরে ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। এছাড়াও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বাইরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক ২০ কোটি ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) ৭২০ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করবে।

গত অর্থবছরে ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩৫ জনের মাঝে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণ করা হয়েছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ ২০ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। আলোচিত অর্থবছরে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।

নীতিমালা ঘোষণাকালে ডেপুটি গভর্নর বলেন, কৃষি ও পল্লি খাতে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষিঋণের কর্মসূচি গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়বৈষম্য দূরে ভূমিকা রাখবে।

নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমানে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ হারে কৃষিঋণ পাবেন কৃষক। এছাড়াও শস্য বা ফসল চাষের জন্য সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণের ক্ষেত্রে সিআইবি রিপোর্টিং ও সিআইবি ইনকোয়্যারির প্রয়োজন পড়বে না।

তিনি বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৫ শতাংশ। জিডিপিতে কৃষির পরিধি ছোট হয়ে আসছে। তবে কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। দেশের প্রায় ৪৩ শতাংশ শ্রমজীবী প্রত্যক্ষভাবে এবং ৮৫ শতাংশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল।

মনিরুজ্জামান বলেন, কৃষিঋণ বিতরণে কোনো ধরনের জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অর্থাৎ গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ পেতে ব্যাংকগুলো সুদ ব্যতীত কোনো ধরনের চার্জ, প্রসেসিং বা মনিটরিং ফি ধার্য না করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও যদি কোনো ব্যাংক তা করে, তাহলে তা নমনীয় মনোভাবই দেখায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই ঋণ পাবেন কৃষক। যদি এ বিষয়ে অতিরিক্ত জটিলতার সৃষ্টি হয়, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাংক কর্মকর্তাদের আগ্রহ কমÑএমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী পরিচালক অশোক কুমার বলেন, কৃষিঋণে হাদিয়া কম, তাই এ ঋণে আগ্রহ কম। সাবেক গভর্নরের আমলে রংপুরে কৃষিঋণ বিতরণের অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে এক ব্যাংকের ৯ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে বিতরণ করা ঋণের মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক ছয় হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, বাণিজ্যিক ব্যাংক তিন হাজার ১০ কোটি, বিদেশি ব্যাংক ৪৮৩ কোটি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১০ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা বিতরণ করবে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০