নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে বহু টাকা কানাডার বেগমপাড়া ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে। যে কেউ চাইলে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ভয়েসিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে খুব সহজে বিদেশে টাকা পাঠাতে পারছেন। এটিকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এনবিআরের কর্মকর্তাদের শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের শক্তিশালী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ কাস্টমস: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সারথি’-শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এই আহ্বান জানান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। পৃথক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনার এ কে এম মাহবুবুর রহমান ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান।
রাজস্ব আরও বাড়ানোর তাগিদ জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আগের তুলনায় রাজস্ব অনেক বেড়েছে, কিন্তু রাজস্ব আদায়ে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) অনুপাতে এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। এটিকে আরও বাড়ানো উচিত। বিশেষ করে আয় করে আমরা এখনও সফল হতে পারিনি। সে জন্য রাজস্ব বিভাগের সক্ষমতা ও দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে অর্থনীতি, কৃষি, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সর্বক্ষেত্রে দেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, বিশ্ব এর স্বীকৃতি দিচ্ছে, প্রশংসা করছে। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ),
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রশংসা করছে। সেখানে দেশের ভেতরে কেউ কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। জাতি হিসেবে আমাদের আত্মসম্মানবোধ থাকা উচিত।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, স্মার্ট কাস্টমস প্রশাসন তৈরিতে হ্যান্ডশেকিং প্রথা বন্ধ করতে হবে। সেটা বন্ধ না হলে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট কাস্টমস প্রশাসন তৈরি করা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সময় আমরা দেখতে পেয়েছি যে, একজন ব্যবসায়ীর তিনটি হিসাবের ফাইল থাকে। এর মধ্যে একটি আয়করের, একটি ভ্যাটের এবং আরেকটি নিজের জন্য তৈরি করা হয়। সে বিষয়টিকে বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে হ্যান্ডশেকিং সুবিধা বন্ধ করে ব্যক্তির সঠিক ভ্যাট আদায় করতে হবে। এনবিআর থেকে যে কর রেয়াত দেয়া হবে, এর বাইরে আর কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া যাবে না। ব্যবসায় যে পরিমাণ আয় হয়েছে এবং যে পরিমাণ ভ্যাট এসেছে, তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। সেই সঙ্গে ঠিকভাবে কর ও ভ্যাট দিয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে এনবিআর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন তিনি।