অর্থ সংকটে চসিকের ৮৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: অর্থ সংকটে ভুগছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত ৮৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এসব প্রতিষ্ঠানে শুধু বেতন-ভাতা বাবদ বার্ষিক ভর্তুকি দিতে হয় প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতি মাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ সাত কোটি টাকা ব্যয় হয়। তাতে প্রতি মাসে চসিক ভর্তুকি দেয় প্রায় চার কোটি টাকা। এছাড়া সংকট রয়েছে ভবন ও শ্রেণিকক্ষের। এসবের আশু সমাধানে ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছে।

জানা যায়, চসিক পরিচালিত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসনে নতুন ভবন নির্মাণ এবং মেরামত ও সংস্কারের জন্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গত বুধবার চসিক মেয়র এ-সংক্রান্ত দুটি পত্রও প্রেরণ করেছে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর। প্রথম পত্রে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ এবং দ্বিতীয় পত্রে অপর ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

চসিকের শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শিক্ষা খাতকে দীর্ঘকাল ধরে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। বর্তমানে চসিক পরিচালিত ৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। চসিক হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ যে অর্থ পায়, তা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি প্রদানে ব্যয় হয়ে থাকে। তাছাড়া এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি বাবদ প্রতি মাসে ছয় কোটি ৯৮ লাখ ৪২ হাজার ৬২৬ টাকা ব্যয় হয়। এতে চসিকের ভর্তুকির পরিমাণ প্রতি মাসে তিন কোটি ৬৪ লাখ ৭৯ হাজার ২১৭ টাকা। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় ছাড়া শুধু বেতন-ভাতাদি বাবদ বার্ষিক ভর্তুকির পরিমাণ ৪৩ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার ৬০৪ টাকা।

বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন ভবন নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজ করা চসিকের পক্ষে খুবই ব্যয় বহুল হওয়ায় তার করপোরেশনের পক্ষে করা সম্ভব হচ্ছে না। চসিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শিক্ষার্থী ভর্তির আগ্রহ বৃদ্ধির কারণে শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে।

দুটি পত্রে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনের লক্ষ্যে নতুন ভবন নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কারকাজ সম্পাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

এ বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন শেয়ার বিজকে বলেন, সিটি করপোরেশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোর অবকাঠামো নড়বড়ে অবস্থা রয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ করা জরুরি। তাই শিক্ষামন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। তিনি সম্ভবত পাঁচটি নতুন ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করতে পারেন।

পত্রে যে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ করার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলোÑকৃষ্ণকুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাথরঘাটা মেনকা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফতোয়াবাদ বহুমুখী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলকরণ নূর আহমদ সিটি করপোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, কুলগাঁও সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, আইয়ুব বিবি সিটি করপোরেশন স্কুল ও কলেজ, শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব বাকলিয়া সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ফিরোজশাহ্ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

অন্যদিকে যে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেরামত ও সংস্কারকাজের কথা পত্রে বলা হয়েছে, সেগুলো হলোÑপাঠানটুলী খান সাহেব সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, রামপুর সিটি করপোরেশন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাঁচলাইশ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, জরিনা-মফজল সিটি করপোরেশন কলেজ, ইমারাতুন্নেসা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাথরঘাটা সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজ, ফতেয়াবাদ শৈলবালা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুয়াইশ বুড়িশ্চর শেখ মোহাম্মদ সিটি করপোরেশন কলেজ, পোস্তারপাড় সিটি করপোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, পাঁচলাইশ এসএম নাছির উদ্দিন সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজ, দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, জহুর আহমদ চৌধুরী সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় এবং ভোলানাথ মনোরমা সিটি করপোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০