নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই হাজার ৪৬৮টি কেন্দ্রের মধ্যে এক হাজার ৫৯৭টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা মোট ভোটকেন্দ্রের ৬৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। এসব কেন্দ্রে ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঢাকার দুই সিটিতে আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। দুই সিটি করপোরেশনে ভোটার রয়েছেন ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। আটটি করে মোট ১৬টি ভেন্যু থেকে গতকাল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই হাজার ৪৬৮টি কেন্দ্রের ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। ভোটের নিরাপত্তায় আগের দিন থেকেই মাঠে নেমেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার সদস্য।
গতকাল খিলগাঁও মডেল কলেজে ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম দেখতে এসে দক্ষিণের রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষিণের এক হাজার ১৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭২১টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন থাকবে। ভোটের দিন যতই এগিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যাও বেড়েছে। আমরা যেটাকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলছি, গণমাধ্যম সেটাকে বলছে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তা সদস্য বাড়বে ও আমাদেরও সতর্ক দৃষ্টি থাকবে।’
আর উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজ থেকে ভোটের সামগ্রী বিতরণ করার সময় সাংবাদিকদের বলেন, এ সিটির এক হাজার ৩১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৭৬টি কেন্দ্রই ‘গুরুত্বপূর্ণ’; বাকি ৪৪২টি কেন্দ্র ‘সাধারণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে ১৮ জন করে। ভোটারদের জন্য ঢাকা শহরকে আমরা একটা নিরাপত্তার চাদরের ব্যবস্থা করেছি। আমার মনে হয়, আগামীকাল আমাদের ভোটাররা উৎসাহমুখর পরিবেশে ভোট দেবেন, কোনো রকম অসুবিধা হবে না। আমি আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই, সবাই যেন ভোট দিতে আসেন। ঢাকা শহরে এটাই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে ইভিএমে ভোট হচ্ছে। যুব সমাজ ডিজিটাল পদ্ধতি পছন্দ করে। এ কারণে আমি ইয়াং জেনারেশনকে বলব, সবাই যেন তারা ভোটকেন্দ্রে এসে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন।’
রিটার্নিং অফিসার বাতেন বলেন, ভোটের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। ইভিএমের প্রস্তুতিও শেষ, মক ও ডেমো ভোটিং হয়েছে।
তিনি জানান, ভোটের সরঞ্জাম পাওয়ার পর প্রতিটি কেন্দ্রে গতকাল শুক্রবার রাতে তা পরীক্ষা করে শনিবার (আজ) সকালে ইভিএম মেশিন ‘সেট’ করা হবে। ভোট শুরুর আগে পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতিতে ইভিএম মেশিনে যে ‘শূন্য’ ভোট রয়েছে তা দেখানো হবে। কোনো ইভিএম মেশিনে সমস্যা দেখা দিলে রিজার্ভ মেশিন ব্যবহার করা হবে।
ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবেনÑএ আশ্বাস দিয়ে বাতেন বলেন, ভোট শেষে প্রিসাইডিং অফিসাররা ট্যাবের মাধ্যমে অনলাইনে রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফলাফল পাঠিয়ে দেবেন। পরে কেন্দ্রীয়ভাবে তা ঘোষণা করা হবে।
উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, ‘নির্বাচন হলো গণতন্ত্রের উৎসব। এ উৎসবটাকে কোনোভাবেই মলিন হতে দেব না। ভোটারদের বলব, কোনো রকম ভয়ভীতি ছাড়া ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।’
