অর্ধেক মূল্যে আমদানি ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি

দেশে আমদানি হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি সব গাড়ি। এসব গাড়ি আমদানিতে এনবিআরের আদেশ বা নিয়ম কিছুই মানা হচ্ছে না। অস্বাভাবিক কম ইনভয়েস মূল্য ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এতে হচ্ছে রাজস্ব ফাঁকি। শুধু কম মূল্য ঘোষণাই নয়, গাড়ির মডেল ও সিসির মিথ্যা ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। মডেলের সামান্য পরিবর্তন দেখিয়ে এইচএস কোড পরিবর্তন করা হচ্ছে। ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির এসব অনিয়ম নিয়ে তিন পর্বের ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে আজ থাকছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে গাড়ি আমদানির অনিয়মের চিত্র

রহমত রহমান: দেশে আমদানি হচ্ছে মিৎসুবিশি, হোন্ডা, হাভাল, টয়োটা, বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, মারুতি সুজকি, অডি, চেরি প্রভৃতির মতো বিশ্বের দামি সব গাড়ি। এসব গাড়ি আমদানিতে এনবিআরের আদেশ বা নিয়ম কিছুই মানা হচ্ছে না। অস্বাভাবিক কম ইনভয়েস মূল্য ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এতে হচ্ছে রাজস্ব ফাঁকি। ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল না করে কমার্শিয়াল ইনভয়েস দাখিল করা হচ্ছে। আবার ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল করলেও মূল্য ঘোষণা দেয়া হচ্ছে বাজার মূল্যের অর্ধেক। শুধু কম মূল্য ঘোষণাই নয়। গাড়ির মডেল, সিসির মিথ্যা ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। মডেলের সামান্য পরিবর্তন দেখিয়ে এইচএস কোড পরিবর্তন করা হচ্ছে। আইসিডি কমলাপুর, চট্টগ্রাম ও মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির অনিয়ম তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ঘোষিত মূল্য কিছুটা ঠিক হলেও আইসিডি কমলাপুর ও মোংলা দিয়ে মূল্য এখনও ঠিক হয়নি। ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির অনিয়ম নিয়ে তিন পর্বের ধারাবাহিকের আজ থাকছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করার গাড়ির অনিয়মের প্রথম পর্ব।

হোন্ডা সিভিক কার। ১৪৯৪ সিসির গাড়িটি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করে ডিএইচএস মোটরস। হোন্ডার বাংলাদেশের একমাত্র ডিলার ডিএইচএস মোটরস চলতি বছরের ৩ এপ্রিল গাড়ি প্রতি ইউনিট ঘোষণা দেয় ১১ লাখ ১০ হাজার জাপানি ইয়েন। থাইল্যান্ডের তৈরি ও থাইল্যান্ড থেকে আসা এই গাড়ির কোনো ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল করেনি। মূলত মূল্য কম দেখিয়ে শুল্ককর ফাঁকি দিতে কমার্শিয়াল ইনভয়েস দাখিল করেছে। প্রতিষ্ঠানটি এই গাড়ির কোনো মূল্য ঘোষণা ফরম দাখিল করেনি। যদিও শুল্ক মূল্যায়ন (আমদানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০০০ অনুযায়ী আমদানিকারক বা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হতে নেয়া ইনভয়েস দাখিল আবশ্যক। প্রতিষ্ঠান ঘোষিত মূল্যে শুল্কায়নের কাস্টম হাউসকে অনুরোধ করে।

কিন্তু শেষমেশ কাস্টম হাউস ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭০ ইয়েনে শুল্কায়ন সম্পন্ন করে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের ঘোষণার চেয়ে ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৫৭০ ইয়েন বেশি মূল্যে শুল্কায়ন হয়েছে। এতে ঘোষিত মূল্যের তুলনায় শুল্কায়িত মূল্য বা রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ ব্র্যান্ড নিউ এই গাড়ি শুল্কায়িত মূল্যের অর্ধেক ঘোষণা দিয়ে খালাস নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এই গাড়ির মূল্য যাচাইয়ে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি যাচাই করে ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭০ ইয়েনে শুল্কায়নে মতামত দেয়। শুধু এই গাড়ি নয়, হোন্ডার আরও কয়েকটি ব্র্যান্ড, মিৎসুবিশি, হাভাল, ল্যান্ড রোভার রেঞ্জ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউর বিভিন্ন মডেলের গাড়ি একইভাবে কম মূল্য বা অর্ধেক মূল্য ঘোষণায় খালাস নেয়া হয়েছে। কিছু গাড়ি খালাস নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এই কাস্টম হাউস দিয়ে এক বছরের গাড়ি আমদানির চিত্র পর্যালোচনা করে এই চিত্র পেয়েছে।

এনবিআর সূত্রমতে, কিছু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েসিং করছে। অর্থাৎ গাড়ির দাম অস্বাভাবিক কম ইনভয়েস মূল্য দেখিয়ে আসছে। কিন্তু বিক্রির ক্ষেত্রে আমদানির চেয়ে অধিক মূল্য বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে একদিকে কম মূল্য দেখিয়ে টাকা পাচার করা হচ্ছে, অন্যদিকে শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। ব্র্যান্ড গাড়ি আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং, শুল্ককর ফাঁকি রোধে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির শুল্কায়নে ২০২০ সালে একটি আদেশ জারি করে এনবিআর। কিন্তু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, কাস্টম হাউসÑকেউই এ আদেশ মানছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি চট্টগ্রাম, আইসিডি কমলাপুর ও মোংলা কাস্টম হাউসের এক বছরের ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানির তথ্য যাচাই করে; যাতে শুল্ককর ফাঁকি, কমমূল্যে গাড়ি আমদানি করে বেশি মূল্যে বিক্রির তথ্য পায়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন দেয় কমিটি। প্রতিবেদন তৈরিতে চারটি বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। তা হলো এনবিআরের আদেশ অনুযায়ী নতুন গাড়ি শুল্কায়ন করা হয়েছে কিনা, না করলে তার কারণ অনুসন্ধান, আদেশের কোনো অস্পষ্টতা থাকলে তা চিহ্নিত করা ও শুল্ককর ফাঁকি হয়ে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ প্রদান। প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস ও মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা গাড়ির পৃথক অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কাস্টম হাউস দিয়ে এক বছরে চারটি ডিলার প্রতিষ্ঠান ও নয়টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানি করেছে। এর মধ্যে চারটি ডিলার প্রতিষ্ঠানের একটি র?্যাংগস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি জাপান, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে মিৎসুবিশির বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি আমদানি করেছে। ডিএইচএস মোটরস ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে হোন্ডা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন গাড়ি আমদানি করেছে। এসিই অটোস প্রা. লি. চীন থেকে হাভাল ব্র্যান্ডের বিভিন্ন গাড়ি আমদানি করেছে। নাভানা লিমিটেড জাপান, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে টয়োটা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন গাড়ি আমদানি করেছে। আর বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছেÑএএস ট্রেডিং লিমিটেড, কার সিলেকশন, অটো মিউজিয়াম, টিবিএইচ কোং, নিউ অটো গ্যালাক্সি, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রা. লি. স্টার্ক উড অটোস, সালসাবিল অটো ও অভি ট্রেডিং। এসব প্রতিষ্ঠান জার্মানি, লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিএমডব্লিউ, ল্যান্ড রোভার, রেঞ্জ রোভার, মার্সিডিজ বেঞ্জ, মোলারেন, আতুরা, এইচওয়াইবি, টয়োটা ও হাইল্যান্ডার গাড়ি আমদানি করেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য, ডিলারের মধ্যে র?্যাংগস লিমিটেড মিৎসুবিশি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন গাড়ি আমদানি করেছে। কিন্তু কোনো আমদানিতে প্রতিষ্ঠানটি ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল করে করেনি। দাখিল করেছে কমার্শিয়াল ইনভয়েস। গাড়ির ঘোষিত মূল্য অস্বাবিক কম। তবে কাস্টম গোয়েন্দা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির একাধিক চালান আটক করে। মূল্য ঠিক করতে কাস্টম হাউসকে চিঠিও দেয়। যার ফলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির শুল্কায়নের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের ঘোষিত মূল্যে শুল্কায়ন করা হয় না। তবে এখনও কিছু গাড়ির ক্ষেত্রে মূল্য ঠিক হয়নি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, র‌্যাংগস ২০২২ সালের অক্টোবরে জাপান থেকে আমদানি করা ১৪৯৯ সিসির মিৎসুবিশি ইক্লিপস ক্রস জিপের মূল্য ঘোষণা দিয়েছে ১৫ লাখ জাপানি ইয়েন। ইন্টারেনেটে এই গাড়ির মূল্য যাচাই করে গাড়িটি শুল্কায়ন করা হয়েছে ২৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫১৬ ইয়েন। কারণ একই গাড়ি অন্য এই কাস্টম হাউস দিয়ে এই মূল্যে শুল্কায়ন করে খালাস নেয়া হয়েছে। এই গাড়িতে ঘোষিত মূল্যের তুলনায় শুল্কায়িত মূল্য বা রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ।

একই ডিলার চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়া থেকে ১৪৯৯ সিসির মিৎসুবিশি এক্সপান্ডার ক্রস এসইউভি আমদানি করেছে। মূল্য ঘোষণা দেয় ১৪ লাখ ২৪ হাজার ইয়ান। শুল্কায়ন করা হয় ২৪ লাখ ৪৩ ইয়ানে। অর্থাৎ ঘোষিত মূল্যের তুলনায় শুল্কায়িত মূল্য বা রাজস্ব বেড়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ। একই ডিলার ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর ১১৯৩ সিসির মিৎসুবিশি অ্যাটারেঞ্জ সিডান কার থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করে। ঘোষণা দেয়া হয় ৭ লাখ ২৫ হাজার ইয়েন। এই গাড়ির মূল্য স্থানীয় বাজার হতে পাওয়া যায়নি। আমদানি করা গাড়িগুলোর তৈরি করা দেশ থাইল্যান্ড মিৎসুবিশির ওয়েবসাইট থেকে গাড়ির মূল্য নেয়া হয়। গাড়ির প্রতি ইউনিটের শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৮ লাখ ৪ হাজার ৮৩৪ ইয়েন। অর্থাৎ এই গাড়িতে ঘোষিত মূল্যের তুলনায় শুল্কায়িত মূল্য বা রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪৮ শতাংশ। যদিও প্রতিষ্ঠান তাদের দাখিল করার কমার্শিয়াল ইনভয়েস অনুযায়ী শুল্কায়নের অনুরোধ জানায়। অ্যাসাইকুডা সিস্টেমে মিৎসুবিশি সেডান গাড়ি আগে ৭ লাখ ২৫ হাজার ইয়েনে শুল্কায়ন করা হয়েছে। একেবারে কম মূল্য ঘোষণা দিয়ে এই গাড়ি খালাস নেয়া হয়েছে। একইভাবে মিৎসুবিশি এক্সপান্ডার সেডান কারও অর্ধেক মূল্য ঘোষণা দিয়েছে এই ডিলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোন্ডার বাংলাদেশের ডিলার ডিএইচএস মোটরস লিমিটেড ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ১৪৯৮ সিসির হোন্ডা বিআর-ভি এসইউভি প্রতি ইউনিট ১০ লাখ ১৫ হাজার ইয়েন ঘোষণা দেয়। ইন্দোনেশিয়ার তৈরি এই গাড়ির ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল না করে কমার্শিয়াল ইনভয়েস দাখিল করা হয়েছে। পরে হোন্ডার ইন্দোনেশিয়ার ওয়েবসাইট যাচাই করে প্রতি ইউনিট ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৭৭৮ ইয়েনে শুল্কায়ন করা হয়েছে। এতে ঘোষিত মূল্যের তুলনায় শুল্কায়িত মূল্য বা রাজস্ব বেড়েছে ১৩০ দশমিক ৪২ শতাংশ। একই প্রতিষ্ঠান হোন্ডা এইচআর-ভি এসআইভি ১৪৯৭ সিসির গাড়ি মূল্য ঘোষণা করেছে ১০ লাখ ১৫ হাজার ইয়েন। শেষে শুল্কায়ন করা হয় ২২ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৯ ইয়েনে। ইডব্লিউ হোন্ডা বিআর-ভি এসইউভি ১৪৯৮ সিসির ঘোষণা দেয় ৯ লাখ ২৭ হাজার ইয়েন। শুল্কায়ন করা হয় ২৪ লাখ ১ হাজার ২৭৫ ইয়েন। যদিও এর আগে এই মডেলের গাড়ি শুল্কায়ন হয়েছে ৮ লাখ ৯০ হাজার ইয়েন।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, এসিআই অটোস প্রা. লিমিটেড হাভাল জলিয়ন ক্রস ওভার এসইউভি (জিপ) ১৪৯৭ সিসির মূল্য ঘোষণা দেয় ১০ হাজার ৪০০ ডলার। চীন থেকে আমদানি করা এই গাড়ির মূল্য যাচাই করে ১৩ হাজার ২২ ডলারে শুল্কায়ন করা হয়। একইভাবে হাভাল এইচ৬ এইচওয়াইবি এসইউভি ১৪৯৯ সিসির মূল্য ঘোষণা দেয়া হয় ১০ হাজার ২০১ ডলার। কিন্তু এই গাড়ির শুল্কায়ন করা হয় ২০ হাজার ১৫ ডলারে। অর্থাৎ ঘোষিত মূল্যের চেয়ে শুল্কায়িত মূল্য ৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানিকারক এসএ ট্রেডিং মার্সিডিজ বেঞ্জ ই-২০০০ হাইব্রিড কার ঘোষণা দিয়েছে ৪৩ হাজার পাউন্ড। মার্সিডিজ বেঞ্জের ওয়েবসাইট যাচাই করে শুল্কায়ন হয়েছে ৫১ হাজার ৫৩৬ পাউন্ডে। একই আমদানিকারকের রোভার ডিফেন্ডার ১১০ এক্স-ডাইনামিক এস ঘোষণা দিয়েছে ৫৬ হাজার পাউন্ড। শুল্কায়ন হয়েছে ৬১ হাজার ৬৯৪ পাউন্ড। কার সিলেকশন বিএমডব্লিউ এক্স-৭ এক্স ড্রাইভ-৪০আই ২৯৯৮ সিসি মূল্য ঘোষণা দিয়েছে ৭০ হাজার ডলার। শুল্কায়ন হয়েছে ৮২ হাজার ৭৯৬ ডলার। অটো মিউজিয়াম লিমিটেড বিএমডব্লিউ আই-৭ এক্সড্রাইভ ৬০ ইলেকট্রিক কার ঘোষণা দিয়েছে ৯০ হাজার পাউন্ড। শুল্কায়ন হয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৫৩১ পাউন্ড। একই আমদানিকারক ল্যান্ড রোভার রেঞ্জ রোভার ইবুক ৩৫ হাজার পাউন্ড ঘোষণা দিয়েছে। শুল্কায়ন করা হয়েছে ৫১ হাজার ৬৫৪ পাউন্ড। নাভানা লিমিটেড টয়োটা অ্যাভেঞ্জা ১৪ হাজার ২৬৬ ডলার ঘোষণা দিয়েছে। শুল্কায়ন হয়েছে ২৪ হাজার ২৬৬ ডলারে। এছাড়া রোভার রেঞ্জ রোভার ভগি, রেঞ্জ রোভার পি৪০০, মার্সিডিজ বেঞ্জ মেবিচ জিএলএস ৬০০, মার্সিডিজ বেঞ্জ এস৫০০, মোলারেন আটুরা হাইব্রিড কার, টয়োটা হাইল্যান্ডার প্রভৃতি গাড়িরও কম মূল্য ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আর টয়োটা করোলা, টয়োটা হাইলাক্স গাড়ি মূল্য ঠিক না করে ঘোষিত মূল্যে শুল্কায়ন করা হয়েছে।

এই বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দার একজন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির শুল্কায়নের ক্ষেত্রে এনবিআর যে আদেশ করেছে, সেই আদেশ পরিপালন করা হয় না। না হলে ডিলার, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছেমতো ঘোষণা দিতে পারত না। ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস নেই। নিজেরা মূল্য ঘোষণা ফরম দেয় না। প্রতিটি গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কায়ন বিধি মানা হয় না। গাড়ির যে মূল্য ঘোষণা দেয়, ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট যাচাই করলে তার দ্বিগুণ দাম পাওয়া যায়। এতে শুল্ককর ফাঁকি হচ্ছে। এনবিআর যে আদেশ করেছে, সেই আদেশ পরিপালন হয় না। বিষয়টি এনবিআরকে খতিয়ে দেখা উচিত। আদেশের কিছু অংশে সংশোধনও করা উচিত।

এ বিষয়ে অটো মিউজিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বারভিডার সভাপতি হাবিব উল্লা ডন শেয়ার বিজকে বলেন, নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে কম মূল্য ঘোষণাসহ কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে গত ৭-৮ বছর কাস্টমস তদারকি করায় মূল্য অনেক বেড়েছে। এক্ষেত্রে নীতিমালা পরিপালন করলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০