নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউক্রেনে ওলভিয়া বন্দরে রকেঅট হামলায় বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে রাশিয়া। যুদ্ধের মধ্যে বাংলাদেশি জাহাজটিতে রুশ বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল বলে ইউক্রেনের গণমাধ্যমে খবর এলেও রাশিয়া স্বীকার কিংবা অস্বীকার না করে বলেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে অবস্থানরত বাংলার সমৃদ্ধিতে গোলার আঘাতে হাদিসুর নিহত হওয়ার পরদিন গতকাল ঢাকার রুশ দূতাবাস শোক জানিয়ে বিবৃতি দেয়।
এতে বলা হয়, ‘আমরা মৃতের স্বজনদের উদ্দেশে গভীর শোক প্রকাশ করছি।’ ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ নৌ বাহিনী। একটি রকেটে জাহাজের উপরিভাগে আঘাত হানার পর আগুন ধরে যায়।
এ হামলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য না দিয়ে রুশ দূতাবাস বলছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হাদিসুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনের বাহিনীও হামলা চালাচ্ছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মনিটরিংয়ে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাশিয়ার সেনা কমান্ড বারবার বলে আসছে, পশ্চাদপসরণের সময় ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদীরা অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে এবং সন্ত্রাসীদের মতো মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহারের জন্য অনেককে জিম্মি করছে।’ তবে বাংলাদেশি জাহাজে হামলার ঘটনায় নাবিকদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলেনি দূতাবাস।
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের আটকে পড়া জাহাজটির নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য রাশিয়া সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই বন্দর থেকে তুরস্ক হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি।
কয়েকদিন পরেই সিমেন্ট ক্লে নিয়ে এটির ইতালির রোভেনা বন্দরের উদ্দেশে যাত্রার কথা ছিল। কিন্তু রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বন্দরেই আটকে যায় জাহাজটি। এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যার দিকে জাহাজটিতে রকেট হামলা হয়। ক্রুদের চেষ্টায় আগুন নেভানো গেলেও ব্রিজে থাকা জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মৃত্যু হয়। ইউক্রেইনে যুদ্ধের মধ্যে রকেট হামলায় বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির এক প্রকৌশলীর মৃত্যুর পর বাকি ২৮ জনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন-বিএসসি।
বিএসসির নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) ড. পীযূষ দত্ত গতকাল বলেন, ‘তাদের ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। ২৮ নাবিক ও জাহাজ সেখানে আছে। নাবিকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে সুস্থভাবে যাতে নিয়ে আসতে পারি।’ জাহাজে থাকা ২৮ জনের সবাই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন বলে জানান পীযূষ দত্ত।