Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 4:31 am

অসংক্রমিত ব্যক্তিদের কভিডের টিকা আগে দেয়ার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিডের টিকা মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। তবে দেশে টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে যারা এখনও সংক্রমিত হননি তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ‘ইমিউন রেসপন্স টু কভিড ১৯: ইমপোর্টেন্স অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার রাতে (৭টা ৩০ মিনিট হতে পারে ১০টা পর্যন্ত) ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্ট’ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে অংশ নেয় কয়েকজন অণুজীববিজ্ঞানী।

আমরা কভিড থেকে পরিত্রাণ পাব কি নাÑএ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে হতাশার কোনো কারণ নেই। এক থেকে দুই বছরের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন হবে, ভাইরাসের অবস্থায়ও পরিবর্তন আসবে।

কভিডের টিকা মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। তবে দেশে টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে যারা এখনও সংক্রমিত হননি তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

‘ইমিউন রেসপন্স টু কভিড ১৯: ইমপোর্টেন্স অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার রাতে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্ট’ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে অংশ নেয় কয়েকজন অণুজীববিজ্ঞানী। আমরা কভিড থেকে পরিত্রাণ পাব কি নাÑএ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে হতাশার কোনো কারণ নেই। এক থেকে দুই বছরের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন হবে, ভাইরাসের অবস্থায়ও পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, ‘জানুয়ারিতে শীতের সময় রেসপিরেটরি ডিজিজের (শ্বাস-প্রশ্বাস-সংক্রান্ত রোগ) মতো কভিডেও সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি ছিল। কিন্তু তা হয়নি। আবার গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে এ বছরের সেপ্টেম্বরে কভিড সংক্রমণ কম ছিল।’ অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, এখন চাইলে ডেলটা ধরনের উপযোগী করে টিকা এক মাসের মধ্যেই তৈরি করা সম্ভব। তাছাড়া দেশে একটি ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট ছিল। পোলিও ও গুটি বসন্ত নির্মূলের পর সেটি টিকা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ চেয়েছিল নিজেরা উৎপাদন করবে না, বরং কিনে নেবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশকে পঙ্গু করে দেয়া হলো।

বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ফলে টিকা নেয়ার আগে সংক্রমিত হয়ে এরপর টিকা না নিলেও পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা টিকা নেয়ার পরের অবস্থার কাছাকাছি। তাই যারা সংক্রমিত হননি তাদের আগে টিকা দেয়া কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া যেতে পারে।

অধ্যাপক সাইফ উল্লাহ মুন্সী আরও বলেন, ইবোলাসহ কিছু ভাইরাসের সংক্রমণে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে সেই রোগ সাধারণত আর হয় না। কভিড ১৯-এর ক্ষেত্রে হিউমোরাল ইমিউন রেসপন্সের প্রভাব এ ক্ষেত্রে অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় প্রকটভাবে আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি মনে করি ভ্যাকসিনেশনের ফলে প্রোটেকশন দিচ্ছে। যদিও লাইফ লং না। আগে কভিডে যেমন ভয় পেয়েছিলাম, জুলাই-আগস্টে এমনটা পাইনি। টিকা আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। কভিডের অতিমারিতে মৃত্যু হার এক শতাংশের কিছুটা ওপরে। এর কারণ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করছে বলেই আমরা ভালো হচ্ছি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কভিডে সংক্রমণের সংখ্যা লুকিয়ে রাখার প্রবণতা আছে। বিজ্ঞানের দিক চিন্তা করে এমনটা করলে ভালো। কিন্তু আমাদের এখানে এমনটা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ডব্লিওএইচও মনে করছে মার্স ও সার্স-১ সংক্রমণের পর মানুষের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও আছে। কাজেই সার্স কোভ টু (করোনাভাইরাস-২) ভাইরাস পরিবর্তিত না হলে, এর বিরুদ্ধে মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণ নেই। এটা ভাইরাসের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে মনে হয় না বুস্টার ডোজ দেয়ার জন্য সাজেস্ট (প্রস্তাব) করব।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. এএম জাকির হোসাইন বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে যাদের মধ্যে ভিটামিন ডি অভাব তাদের কভিডে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর হার বেশি।