এনামুল হক নাবিদ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): একদিকে খালে বেড়েছে অমাবস্যার জোয়ারের পানি, অন্যদিকে গত রোববার মধ্য রাত থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। পরেরদিন সোমবার সকাল থেকে সারাদিন হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। এসব কারণে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বেশিরভাগ শীতকালীন সবজি ডুবে গেছে পানির নিচে। ডুবে যাওয়া এসব সবজির মধ্যে আলু, সিম, বাদাম ও শালগম নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এছাড়া মাঠে কেটে রাখা আমন নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
সপ্তাহখানেক আগে উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় শুরু হয়েছে পুরোদমে আমন কাটার কাজ। মৌসুমি ফসল হওয়ায় কৃষকরা বেশিরভাগ ধান কেটে মাঠে রেখে দিয়েছেন। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এসব ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে সোমবারের দিনভর টানা বৃষ্টির কারণে পানি জমে হয়েছে ফসলের ওপর।
গতকাল সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী ফকিরার চর এলাকায় দেখা যায়, এখানে আগাম শীতকালীন সবজি সিম, লাউ ও বেগুনের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। মৌসুমি মরিচ, আলু, মিষ্টি আলু, বাদাম, শালগম সবেমাত্র রোপণ করা হয়েছে। অসময়ের টানা বৃষ্টির কারণে এসব শীতকালীন মৌসুমি সবজি নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা। কেউ কেউ সবজি রোপণ করেছেন সপ্তাহখানেক আগে। এছাড়া অনেক কৃষক ক্ষেত তৈরি করছেন।
টানা বৃষ্টির কারণে যেসব এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা হলোÑহাইলধর এলাকার কৃষির প্রাণকেন্দ্র ফকিরারচর, রায়পুর, জুইদণ্ডী ও বটতলী। আজকালের মধ্যে বৃষ্টি না থামলে বীজতলা টিকিয়ে রাখার সম্ভাবনা কমে যাবে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে রোপণকৃত আলু ও চীনা বাদাম নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এছাড়া মরিচ ও সিমের বিচি নষ্ট হতে পারে।
ফকিরার চর এলাকার কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আলু ও সিম বিচি নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে বেশি নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে মৌসুমি মরিচ। এসব মরিচ নষ্ট হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চর এলাকার কৃষকরা।
আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, আমন মৌসুমে হঠাৎ টানা বৃষ্টির কারণে সবজির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। সব এলাকার রিপোর্ট নিচ্ছি। কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করি, বৃষ্টি আর না হলে সবজির তেমন ক্ষতি হবে না।