আঠারো থেকে ত্রিশ বছর বয়সী তরুণদের মানবতার সেবায় নিয়োজিত রাখা ও একত্র করার চেষ্টা থেকেই মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) রোটার্যাক্ট ক্লাবের কাজ শুরু। এটি মূলত তরুণ ও স্থানীয় রোটারি ক্লাবের সহায়তায় গড়ে ওঠা একটি সেবামূলক সংগঠন। এ সংগঠনের তরুণদের কর্মপ্রচেষ্টার গল্প শোনাচ্ছেন মীর মাইনুল ইসলাম
১৯৬৮ সালে প্রথম রোটার্যাক্ট ক্লাবের যাত্রা শুরু হয় আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। যার মাধ্যমে তরুণরা দেশ তথা বিশ্ব উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করতে পারে তাদের মেধাকে। তরুণদের মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরি, দায়িত্ব গ্রহণ ও সঠিকভাবে তা পালনসহ নানা বিষয়ে ক্লাবসহায়ক ভূমিকা পালন করেন। ২০০৬ সালের শুরুতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। এ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন মোহাম্মদ কানিসুর রহমান। তার হাত ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ক্লাব সফলভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দলের সদস্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের পরিধিও বেড়েছে। সেই সঙ্গে আর্তমানবতার সেবার পাশাপাশি তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর লক্ষ্যটা এখনও একই আছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ক্লাবের সদস্যরা হাত বাড়িয়ে দেন দেশের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য। কখনও তারা বন্যার্তদের পাশে হাজির হন ত্রাণ নিয়ে, আবার কখনও শীতের তোড়ে কাঁপতে থাকা মানুষকে পৌঁছে দেন শীতবস্ত্র।
এছাড়া ক্লাবের রয়েছে নানা সেবামূলক কার্যক্রম। এসবের অন্যতমÑ বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা, অসহায় মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বৃক্ষরোপণ, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, মাদকবিরোধী প্রচারণা, পথশিশুদের কুইজ পরীক্ষা ও আনন্দ আয়োজন পরিচালনা করা। ক্লাবের সদস্যদের কাজের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয় বিভিন্ন পুরস্কার। নিয়মিতভাবে সদস্যদের স্বেচ্ছাশ্রমের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও তারা শীতার্ত অসহায় মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রচণ্ড শীতে যখন দেশের অনেক স্থান কাঁপছে, তখন তারা শীতবস্ত্র হাতে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। ২৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের ওই আয়োজনে সহযোগিতা করে রোটারি ক্লাব অব টাঙ্গাইল ও রোটারি ক্লাব অব টাঙ্গাইল সিটি। ‘শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান-২০১৭’ শিরোনামে প্রায় ২০০ দুস্থ মানুষের হাতে ওইদিন তুলে দেওয়া হয় শীতবস্ত্র।
ক্লাবটির সহসম্পাদক সুবর্ণা সৈয়দ ইতি। তিনি ক্লাব নিয়ে তার স্বপ্নের কথা বলেন। অন্যের অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ ও নৈতিক মানোন্নয়ন তাদের লক্ষ্য। শীতে কাবু প্রায় গরিব-দুস্থদের শীতবস্ত্র বিতরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্রত্যেক বছর ক্লাব গরিব-দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে। তিনি বলেন ‘আর্তমানবতার সেবায় নিরলস পরিশ্রম করে যাওয়ার মাধ্যমে গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আছে আমাদের নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছি’।
Add Comment