অস্থিরতার মধ্যেও ‘হাইপড-আপ’ শেয়ারে বিনিয়োগকারী ছুটছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজার সপ্তাহের ব্যবধানে সূচকের উত্থানের মাধ্যমে গত সপ্তাহ পার করেছে। এতে টানা তিন সপ্তাহ ধরে উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। সপ্তাহটিতে সূচকের উত্থান হলেও লেনদেন কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহে বিক্রির চাপে গত সপ্তাহে কিছুটা অস্থিরতা থাকলেও, স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় খাতভিত্তিক এবং কিছু ‘হাইপড-আপ’ বা চাহিদায় থাকা শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের কেনার চাপ থাকায় উত্থান হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এতে সপ্তাহটির বেশিরভাগ কার্যদিবসে সূচক বেড়েছে। কিন্তু বাজারে এখনও বর্তমান সামষ্টিক অর্থনীতি ও দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির অনিশ্চতায় বাজারের গতিবিধি নিয়ে নড়বড়ে আস্থার কারণে শেষ দিনগুলোয় পতন হয়েছে বলে জানান তারা।

আলোচ্য সপ্তাহের উত্থানে বিমা খাতের ভূমিকা ছিল। এ খাতের শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল। ফলে সবচেয়ে বেশি কেনার চাপ থাকায় সপ্তাহটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে আলোচ্য খাতের শেয়ার। এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় আইটি খাতের দর সবচেয়ে বেশি কমেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২ হাজার ৮৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬২২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে ২৪১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ২১ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে।

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহের ব্যবধান ৫ দশমিক ০৫ পয়েন্ট বা দশমিক ০৮ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৩০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আলোচ্য সপ্তাহে বাজার মূলধনের শীর্ষ ৩০ কোম্পানির মূল্যসূচক ডিএস৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে দশমিক ৬৩ শতাংশ।

আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৬৯টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৬টির, কমেছে ৯৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০৪টির।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় খাতভিত্তিক এবং কিছু চাহিদায় থাকা শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের কেনার চাপ থাকায়, বাজারে এখনও বর্তমান সামষ্টিক অর্থনীতি ও দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির অনিশ্চয়তার কারণে অস্থিরতা থাকার পরও উত্থান হয়েছে গত সপ্তাহে। এতে স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় খাতভিত্তিক শেয়ার ছাড়াও বিমার শেয়ারে সুযোগ সন্ধানী বিনিয়োগকারীদের কেনার চাপ বেড়েছে।  বিনিয়োগকারীরা এই সপ্তাহে কেনাবেচার উভয় পক্ষেই সক্রিয় ছিলেন। কারণ তারা বিনিয়োগের খাত পরিবর্তন করতে আগ্রহী ছিলেন। এতে অন্য খাত থেকে স্থানান্তর হয়ে খাতভিত্তিক এবং ‘হাইপড-আপ’ বিমা খাতের শেয়ারে কেনার চাপ বাড়িয়েছেন। তবে বাজারে বর্তমানে অস্থিরতা বিরাজ করায় সপ্তাহের শেষ দিনগুলোয় পতন হয়েছে বলে জানান তারা।

এদিকে গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাত। খাতটিতে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড খাত। এছাড়া গত সপ্তাহে বিক্রির চাপ সবচেয়ে বেশি থাকা আইটি খাতের শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিবিধ এবং পাট খাত। ১ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪৪ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে। ৭ শতাংশ লেনদেন হয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাত।

আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ১৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। আগের সপ্তাহে পিই রেশিও ছিল ১৪ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। এতে আগের সপ্তাহের চেয়ে ডিএসইর পিই রেশিও দশমিক ১ পয়েন্ট বা দশমিক ০৬৯ শতাংশ কমেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০