নিজস্ব প্রতিবেদক: ফের অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদন ও বিক্রির অনুমোদন পেয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, সম্প্রতি লাফার্জহোলসিমকে অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদন ও বিক্রির অনুমোদন দিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার চুনাপাথর চূর্ণ করার মাধ্যমে অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদনের নীতি চূড়ান্ত না করা পর্যন্ত এই অনুমতি কার্যকর থাকবে। আর সরকার কর্তৃক এ ধরনের নীতি প্রকাশের পর কোম্পানিটিকে সরকারের নীতির অধীনে অনুমতির জন্য আবার আবেদন করতে হবে।
এর আগে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের চুনাপাথর চিপ বা অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদন বন্ধের বিষয়ে করা মামলার শুনানির দিন ছিল গত ৩১ জানুয়ারি। কিন্তু এ দিন বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় শুনানি না হওয়া পর্যন্ত পণ্যটির উৎপাদন বন্ধ রাখবে বলে জানিয়েছিল কোম্পানিটি। আর ওই ঘোষণার পর শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ফের অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছে কোম্পানিটি।
এর আগে আপিল বিভাগের চেম্বার জজের আদেশের পর গত ১৮ জানুয়ারি থেকে অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে লাফার্জহোলসিম। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালত শুনানির দিন পিছিয়ে ৩১ জানুয়ারি নির্ধারণ করায় চেম্বার আদালতের নির্দেশনা মেনে ওই দিন পর্যন্ত পণ্যটির উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটি। তবে এ দিনও মামলাটির শুনানি না হওয়ায় পণ্যটির উৎপাদন কার্যক্রমও অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ থাকছে।
অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদন ও ব্যবসা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর লাফার্জহোলসিমকে চিঠি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা-সংক্রান্ত চিঠিটি তারা হাতে পায় ২০ সেপ্টেম্বর। ব্যবসা বন্ধের নির্দেশনার কারণ হিসেবে ওই চিঠিতে সে সময় বলা হয়, লাফার্জহোলসিম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেয়নি। এ চিঠি হাতে পাওয়ার পরপরই আইনি পদক্ষেপ নেয় লাফার্জহোলসিম। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। শুনানি শেষে গত ১৬ নভেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিঠির কার্যকারিতা এক মাসের জন্য স্থগিত করে রায় দেন হাইকোর্ট। এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় অ্যাগ্রিগেটসের উৎপাদন ও বিপণন শুরু করেছিল লাফার্জহোলসিম। পরবর্তী সময়ে এ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজের আদালতে আপিল করে শিল্প মন্ত্রণালয়। আপিল শুনানি শেষে গত ২৩ নভেম্বর চেম্বার জজের আদালত শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করা-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত থাকবে বলে রায় দেন। ফলে ২৩ নভেম্বর থেকেই কোম্পানিটির অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদন ফের বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের আদেশে ফের উৎপাদন শুরু করে কোম্পানিটি। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে করা কোম্পানিটির রিট পিটিশনের এক আদেশের পর সে সময় উৎপাদন শুরু করা হয়। তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে সিএমপি দাখিল করে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জানুয়ারি চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেয়া আগের আদেশ স্থগিতের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দাখিলকৃত সিএমপি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান বিচারক।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ১৬১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৫৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।